বাঙালির ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব সর্ম্পেকে জানুন
নবান্ন শব্দের অর্থ ''নতুন অন্ন" বা "নব অন্ন"।নবান্ন উৎসব হলো নতুনধান কাটে ঘরে উঠানো পর সেই ধান থেকে তৈরি চাল ও আটার তৈরি বিভিন্ন খাবার তৈরি আয়োজিত উৎসব।বাংলিরা প্রতি বছর এই উৎসব খুব ঘটা করে পালন করে।
চালের আটা, গুড় ও চিনি দিয়ে বাঙালি মেয়েরা বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি তৈরি করে। নিচে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব সর্ম্পেকে জানুন।
.
ভূমিকা
নবান্ন উৎসব ঋতু কেন্দ্রিক একটি উৎসব।নবান্ন উৎসব বাংলার ঐতিহ্য বা একটি উৎসব।নবান্ন এলে পিঠে পুলি উৎসব করা হয়। চালের আটা, গুড় ও চিনি দিয়ে বাঙালি মেয়েরা বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি তৈরি করে।। বিভিন্ন পিঠাগুলোর মধ্যে রয়েছে পুলি পিঠা, পাটিসাপ্টা, ভাপা পিঠা,তেল পিঠা, চিতই পিঠা ইত্যাদি।
নবান্ন উৎসব কিভাবে পালন করা হয়
নবান্ন উৎসব হল নতুন ধান তোলার উৎসব। হেমন্ত ঋতুতে আমন ধান পর এ উৎসব উদযাপিত হয়। কৃষকরা ধান থেকে চাল তৈরি করে এবং বাঙালি মেয়েরা সেই চাল থেকে আটা তৈরি করে পিঠাপুলি তৈরি করে নবান্ন উৎসব পালন করে। হেমন্ত শেষে প্রারম্ভে অগ্রহায়ণ দিকে ধান কাটা কে কেন্দ্র করে গ্রামের বাঙালি এর ঘরে ঘরে চলে নবান্ন উৎসব।বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সমস্যা বেশি দেখা যায়।
অগ্রহায়ন মাসে সোনালী ধানে ভরে যায় মাঠ। চলে ধান কাটার উৎসব। ধান থেকে চাল এবং চাল থেকে আটা তৈরি করা হয়। একই সময়ে গাছ থেকে খেজুরের রস পেড়ে খেজুরের গুড় তৈরি করা হয়।চালের আটা, গুড় ও চিনি দিয়ে বাঙালি মেয়েরা বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি তৈরি করে। বিভিন্ন পিঠাগুলোর মধ্যে রয়েছে পুলি পিঠা, পাটিসাপ্টা, ভাপা পিঠা,তেল পিঠা, চিতই পিঠা ইত্যাদি। এভাবেই শীতের শুরু থেকে উদযাপিত হয় পিঠা উৎসব। এভাবেই প্রতিবছর বাঙালিরা নবান্ন উৎসব পালন করে থাকে।
নবান্ন কি ধরনের উৎসব
নবান্ন উৎসব ঋতু কেন্দ্রিক একটি উৎসব। নবান্ন উৎসব বাংলার ঐতিহ্য বা একটি উৎসব। নবান্ন উৎসব একটি বাৎসরিক উৎসব। প্রতি এই উৎসবটি বাঙালিরা ব্যাপকভাবে পালন করে।গ্রাম বাংলার উৎসবের বর্ষপঞ্জির শুরুটা হয় এই নবান্ন দিয়েই।আর সমাপ্তি ঘটে চৈত্রসংক্রান্তির চড়কে।নবান্ন মূলত কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং জন্য সুফসল প্রাপ্তির কামনায় নিবেদিত উৎসব হিসেবে অভিহিত করে থাকেন লোক সংস্কৃতির গবেষকরা।
একসময় বাংলা মাস হয়ে শুরু হতো অগ্রহায়ণ কথিত আছে মুঘল শাসনের শুরুর দিকে অঞ্চলে বন্যায় আমন ধান নষ্ট হয়ে গেলে খাজনা আনাদায়ী থাকত।তাই খাজনা আদায় নিশ্চিত করতে পহেলা অগ্রহায়নের বদলে পহেলা বৈশাখ থেকে খাজনা আদায় করার আইন করা হয়। এ ব্যাপারে প্রয়াত লেখক, লোকসংস্কৃতির ওপরে সাহিত্যিক গবেষক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান তার লেখায় বলেছেন মোগল সম্রাটের সুবেদার মুর্শিদকুলি খানের উপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করে প্রচুর পরিমাণে কর আদায় নির্দেশ জারি করেন।
কৃষিভিত্তিক বাংলায় মোগলদের আচরিত হিজরী সন কৃষকের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের জন্য ছিল প্রতিকূল। কারণ প্রতিবছর হিজরী সন ১০ থেকে ১২ দিন পিছিয়ে যায়। এদিকে বিবেচনায় মুর্শিদকুলি খান আকবর প্রবর্তিত এলাহী সন আদলে বাংলায় হিজরী চান্দ্র ও ভারতীয় সূর্য স মিলিত বাংলা সন চালু করেন বলে মনে হয় পরম্পরা দেই আইলা অগ্রহায়নের বদলে এখন বাঙালির প্রধান উৎসব নববর্ষ বা পহেলা বৈশাখ। তাই সর্বোপরিষরা অগ্রায়নের নবান্নের সেই যাক আলো ভাব আর নেই তবু গ্রামীণ সংসদে বিভিন্ন রয়ে যেতে পালিত হয় ইতিহাসের সেই ধারাকে অনেকখানি ধরে রেখেছে।সামাজিক প্রথা রীতি ও কৃত্তের পরিক্রমায় জায়গায় জায়গায় মাঘ মাসেও নবান্ন উদযাপন প্রথা রয়েছে।
আরো পড়ুনঃবাংলালির নবান্ন উৎসব সম্পর্কে জানুন।
নবান্ন উৎসব কত তারিখে
১লা অগ্রহায়ণ দেশ জুড়ে নবান্ন উৎসব সব পালিত হয়।গ্রাম বাংলার কৃষকরা ধান কেটে ঘরে তোলার পর চাল ও আটা তৈরি করে বাঙালি মেয়েরা চালের গুড়া, দুধ, চিনি, গুড়,নারিকেল দিদি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা পুলি তৈরি করে নবান্ন উৎসব উদযাপন করে।নবান্ন উৎসব হয় কোন মাসে
নবান্ন উৎসব উদযাপিত হয় বাংলা ক্যালেন্ডারের অগ্রহায়ণ মাসে।
নবান্ন ও পিঠা উৎসব
নবান্ন আর পিঠে ফুলে উৎসবে করা হয় সবাই তাই অগ্রহায়ণ এলে সর্বোচ্চ বেজে ওঠে নতুন ধনী যেহেতু নবান্ন ঋতুর কেন্দ্রিক একটি উৎসব তাই প্রতিবছর ঘুরে ফিরে আসেন নবান্ন উৎসব কেমন নতুন ফসল ঘরে তোলার সময় এর উৎসব পালন করা হয় পুরনো এই উৎসবটি যুগ যুগ ধরে একই ভাবে পালন হয়ে আসছে।নবান্ন ও সবে গ্রামগঞ্জে আয়োজন করা হয় গ্রামীণ মেলা।
এসব মেলায় শিশু কিশোর থেকে শুরু করে সব শ্রেণীর পেশার মানুষের ঢল নামে। আনন্দদেখা যায় বয়সের মানুষের মধ্যে গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ এই উৎসব ভিন্নভাবে পালন করে। মেলায় রাতভর চলে গানের উৎসব। উপস্থিত থাকেন নবীন প্রবীণ সবাই রকম মানুষ। হরেক রকমের বাহারি সব খাবারের খাবারের পসরা দিয়ে বসানো হয় গ্রামীণ মেলা । গ্রামের মেলা তবে গ্রামীণ মেলা এখন আর শুধু গ্রামে হয় না শহরের মানুষও এখন নবান্নে স্বাদ নিয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃবাংলালির নবান্ন উৎসব সম্পর্কে জানুন।
২.নবান্ন উৎসবে বিভিন্ন রকম পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়।
নবান্ন উৎসব সম্পর্কে ৫ টি বাক্য
১.নবান্ন উৎসব বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি উৎসব।২.নবান্ন উৎসবে বিভিন্ন রকম পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়।
৩.নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয় ও এসব মেলার হাতে তৈরি জিনিসপত্র বেশি দেখা যায়।
৪.সাধারণত আমন ধান অগ্রহায়ন মাসে কাটার পর এ অনুষ্ঠান পালন করা হয়।
৫.নবান্ন উৎসব ঋতু কেন্দ্রিক একটি উৎসব।
লেখকের মন্তব্য
নবান্ন উৎসব আমাদের সকলের কাছে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে কিন্তু বর্তমানকালের বিবর্তনে নবান্ন উৎসব পালন খুবই পরিমাণে কমে গিয়েছে। সেহেতু আমাদের দায়িত্ব আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান প্রতিবছর পালন করা।
https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html
comment url