হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি অনেকর মনে এই প্রশ্ন জাগতে পারে। ঘন ঘন শ্বাস ওঠানামা দম বন্ধ অনুভূতি স্বাভাবিক ভাবে নিঃশ্বাস নিতে না পারা এসবকে শ্বাসকষ্ট বলে।বিভিন্ন কারণে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। সর্দি, কাশি হলে, ফুসফুসে পানি জমলে,হৃদপিন্ডের সমস্যা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
কখনো কখনো, শ্বাসকষ্ট হৃদরোগ বা ফুসফুসের সমস্যাগুলোর মত অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যের অবস্থার লক্ষণ হতে পারে।হটাৎ শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছোট বড় যেকোনো বয়স এর মানুষ এর হতে পারে। আপনি যদি এই সমস্যার কারন , প্রতিকার,কি কি করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পওয়া যাবে ,শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায় জানতে চান তাহলে অ্যাটিকেলটি মনযোগ দিয়ে পড়ুন।
ভূমিকা
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট মারাত্মক সমস্যা না হলেও এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট যদি হৃদপিন্ডের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে তাহলে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করবে। হৃদপিণ্ড ছাড়া অন্যান্য কারণে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে খুব একটা দুশ্চিন্তার কারণ নেই। বিভিন্ন উপায়ে সমস্যা সমাধান করা যায়।
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট কেন হয়
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বিভিন্ন কারণে হতে পারে।হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি? বয়স বা লিঙ্গ যেকোনো সময় কষ্ট বা ডিসপনিয়া অনুভব হতে পারে ।হঠাৎ শ্বাসকষ্টের কারণগুলোর মধ্যে দীর্ঘ দূরত্বে দৌড়ানো বা জগিং বা উচ্চ তীব্রতা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। ব্যায়াম করার সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কখনো কখনো,
শ্বাসকষ্ট হৃদরোগ বা ফুসফুসের সমস্যাগুলোর মত অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যের অবস্থার লক্ষণ হতে পারে।
শ্বাসকষ্ট হৃদরোগ বা ফুসফুসের সমস্যাগুলোর মত অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যের অবস্থার লক্ষণ হতে পারে।
ফুসফুসের বাধা বা সমস্যা শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে। যেমন :
- হাঁপানি
- বিষম
- এলার্জি
- রক্তপিণ্ড
- নিউমোনিয়া
- যক্ষা
- ফুসফুসে প্রদাহ বা তরল জমা হওয়া পালমোনারি হাইপারটেনশন
- আংশিক বা সম্পূর্ণ ফুসফুস পতন
- ফুসফুস ক্যান্সার।
হৃদপিন্ডের সমস্যাগুলি হঠাৎ বা বারবার শ্বাসকষ্টের কারণ হতে পারে যার মধ্যে রয়েছে ;
- arrhythmia
- Cardiomyopathy
- হার্ট ব্যর্থতা
হার্টের প্রদাহ এন্ডোকার্ডাইটিস,পেরিকার্ডাইটিস বা মায়োকার্ডাইটিসের দিকে পরিচালিত করে।
হঠাৎ শ্বাসকষ্টের আরও অন্যান্য কারণ থাকতে পারে যেমন :
- উদ্বেগ
- একটি আঘাত যেমন একটি ভাঙ্গা পাঁজর
- ওষুধ যেমন স্ট্যাটিন বিটা -ব্লকার
- চরম তাপমাত্রা
- (BMI)বডি মাস ইনডেক্স 30 এর উপরে থাকা ইত্যাদি।
শ্বাসকষ্টের লক্ষণ
- শ্বাসকষ্টে লক্ষণগুলি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিদের পরিবর্তিত হতে পারে তাদের উপলব্ধি এবং এর কারণের অন্তর্নিহিত অবস্থার ওপর নির্ভর করে। কখনো কখনো শ্বাসকষ্টের সাথে অন্যান্য উপসর্গ থাকতে পারে কিছু সাধারণ লক্ষ্য গুলোর মধ্যে নিম্নলিখিতগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে :-
- ঘ্রাণ (শব্দে শ্বাস নেওয়া)
- বুক টান
- দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস
- উচ্চ হৃদস্পন্দনের হার বা ধড়ফড়
- মনে হচ্ছে জোর করে শ্বাস নেওয়া দরকার
- একটি গভীর শ্বাস পেতে কঠোর পরিশ্রম
কখনো কখনো বুকে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্টের মতো অন্যান্য উপসর্গ থাকতে পারে এ ধরনের রক্ষাগুলো উপেক্ষা করা উচিত নয়। অবিলম্বে চিকিৎসা করানো উচিত।
আরো পড়ুন :হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি ?
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি? হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে যে সকল কৌশল অনুসরণ করা যেতে পারে সেগুলো হলো ;
- হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে বালিশ দিয়ে মাথার দিকটা উঁচু করে কাত হয়ে শুয়ে থাকতে হবে তখন হাটু সামান্য ভাজ করা যেতে পারে।
- চেয়ারে বসে টেবিলের উপর বালিস রেখে তাতে মাথা নিচু করে শুলে ভালো বোধ করবেন।
- আবার একটা চেয়ার কে সাপোর্ট হিসেবে ব্যবহার করে ঝুঁকে থাকলেও এ সমস্যা কিছুটা হলেও কমে।
- দেয়াল থেকে এক ফুট দূরত্বে পা রেখে দেয়ালে শরীর হেলান দিয়ে দাঁড়ালে শ্বাসকষ্ট অনেকটা কমে যায়।
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় ব্যায়াম
- সোজা হয়ে বসুন আপনার হাত দুটি থাইয়ের ওপর রাখুন।
- মুখ খুলে যতটা সম্ভব বাতাস টেনে নিন।
- ঠোঁট চেপে রাখুন।
- যতক্ষণ সম্ভব ততক্ষণ শ্বাসটা শরীরের মধ্যে রেখে দিন। আপনি কতক্ষণ ধরে এটি আটকে রাখতে পারেন তার ওপর আপনার ফুসফুসের সুস্বাস্থ্যের দিকটি নিশ্চিত হয়।
- বুক ভরে শ্বাস নিয়ে যতক্ষণ সম্ভব ধরে রাখা এরপর আস্তে আস্তে শ্বাস ছাড়তে হবে। এর ফলে ফুসফুসের কোষ গুলোর ব্যায়াম হয় , হলে সেটির স্থায়ী ক্ষতি হতে পারেনা।
শ্বাসকষ্ট হলে কি কি খাওয়া যাবে না
- কফি, চা বা অন্যান্য অনেক স্যালিসিলেটস নামক পদার্থ থাকে দেহের প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করতে পারলও শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করে। তাই কফি এড়িয়ে চলতে হবে।
- মাছের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড অ্যাজমা আক্রান্ত রোগীর জন্য প্রচুর ক্ষতি করে যা হঠাৎ শ্বাসকষ্টের কারণও হতে পারে মাঝে কমে গেছে ফ্যাটি অ্যাসিড খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- সাপ্লিমেন্ট বা কোন ধরনের লিকুইড নাইট্রোজেন দেহ ক্ষতি করে।
- ধূমপান ত্যাগ ও তামাকজাত দ্রব্য পরিহার করতে হবে।
শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির উপায়
সরিষার তেল হালকা গরম করে বুকে- পিঠে, গলায় ভালো করে মাসাজ করুন এতে শ্বাসকষ্ট কমে যাবে। ফুসফুস ঠিকমতো কাজ করলেই শ্বাস- প্রশ্বাস ও স্বাভাবিকভাবে হতে শুরু করে। ফুসফুসের কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে খুবই উপকারী ডুমুর। কয়েক পানিতে ভিজিয়ে রাখুন সকালে খালি পেটে পানি ও ডুমুর খেয়ে ফেলুন এতে শ্বাসকষ্টের কিছুটা নিরাময় ঘটবে। তাছাড়া প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।আরো পড়ুন : এইচ আই ভি এইডস এর লক্ষণ ও কারণ
শ্বাসকষ্ট হলে ঘরোয়া চিকিৎসা
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি?শ্বাসকষ্ট হলে ঘরোয়া চিকিৎসা কোন ব্যবস্থা আছে কি ? অনেকের মনে এই প্রশ্ন জাগতে পারে উত্তর হলো আছে । যেমন,
- শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে সামনের দিকে ঝুঁকে বসতে হবে। এটি করলে শরীর রিলাক্স এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হয় এভাবে ঝুঁকে বসার ফলে ফুসফুস ও হার্টের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। তাই শ্বাসকষ্ট হলে এ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এটি করার ক্ষেত্রে কোনো চেয়ারে বসে, পা মেঝের সমতলের রেখে সামনের দিকে ঝুঁকে থাকতে হবে এবং ও কাঁধের পেশিগুলোকে রিলাক্সে রাখতে হবে।
- পেটের পেশীকে ব্যবহার করে গভীরভাবে শ্বাস নিলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। কোনো সমতল জায়গায় শুয়ে থেকে পেটের উপরে হাত রাখতে হবে এবং তারপর নাক দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নিতে হবে। এভাবে গভীর সাজ গ্রহণ করে কিছুক্ষণ ধরে রেখে শ্বাস ছাড়তে হবে এতেই মিলবে শ্বাস কষ্টের সমস্যা থেকে মুক্তি।
- ব্রিদিং এক্সারসাইজের মধ্যে পার্সড লিপ ব্রিডিং হচ্ছে -অনেক সহজ ও কার্যকারী।উদ্বেগের কারণে কখনো শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকলে এ পদ্ধতি অনেক বেশি কাজে আসে।এটি করতে প্রথমে ঘাড় ও কাঁধের পেশিগুলোকে রিলাক্স রাখতে হবে। এরপর ধীরে ধীরে নাকের মাধ্যমে শ্বাস গ্রহণ করে ২-৩ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখতে হবে এবং এ সময় মুখ বন্ধ রাখতে হবে। তারপর ঠোট হালকা খুলে শিস দেওয়ার মতন করে করে আস্তে আস্তে শ্বাস ছাড়তে হবে ৪-৫ সেকেন্ড ধরে। এভাবে মিলবে অনেকটা স্বস্তি।
- স্টিম ইনহেলার নেওয়ার কারণে অনেক সময় শাসনালীতে ঘন শ্লেষ্মা জমতে পারে, যেটি শ্বাসকার্যের বাধার সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে স্টিম ইনহেলসন বা গরম ভাপ নিলে শ্বাসনালীতে জমে থাকা ঘন শ্লেষ্মা তরলে পরিণত হয়। ফলে শ্বাসনালীতে কোন বাধা না থাকায় শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- হলুদে অনেক আন্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ রয়েছে।এটি শরীরকে সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করে। দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে পান করলে সেটি শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা দূর করে। হলুদে কার কিউমিন থাকার এলার্জির প্রতিক্রিয়া ও হিস্টামিন নিঃসরণ বন্ধ করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই গুণাবলী গুলো থাকার কারণে হলুদ শ্বাসকষ্ট সমস্যা দূর করতে অনেক উপকারী।
https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html
comment url