ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। বর্ষাকাল তার মধ্যে একটি।
বর্ষা সংগঠিত হয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে। আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই মাস মিলে বর্ষাকাল।
বাংলাদেশের ঋতুচক্র অনুযায়ী বর্ষাকাল হলো দ্বিতীয় ঋতু। বর্ষাকালে আমাদের দেশে
বৃষ্টি নামে কখনো মুষলধারে আবার কখনো গুড়ি গুড়ি। বর্ষাকালে প্রকৃতি যেন এক নতুন
রূপে সেজে ওঠে। বর্ষাকালের উপকারিতা অনেক। এবং কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। আমরা এখন
বর্ষাকালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো এজন্য পুরো আর্টিকেলটি
মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
.
ভূমিকা
বসন্তকে বলা হয় ঋতুরাজ। প্রকৃতির রানী বলা হয় বর্ষাকালকে। মানুষ যখন চৈত্র,
বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠের খরা তাতে অতিষ্ঠ তখন বর্ষাকাল নিয়ে আসে স্বস্তি। বৈশাখ ও
জ্যৈষ্ঠ মাস মিলে গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মকালের পরেই বর্ষাকালের আগমন ঘটে। আষাঢ় ও
শ্রাবণ মাস মিলে হয় বর্ষাকাল। আবহাওয়া বেশ সুন্দর থাকে গরম ও শীতের
মাঝামাঝি অবস্থায়। বর্ষাকাল বৃষ্টির প্রেমী মানুষদের মনে এক অদ্ভুত আনন্দে জাগরণ
করে। বর্ষাকালের উপকারিতা অনেক। বর্ষাকাল প্রাণী ও প্রকৃতির জন্য ভীষণ উপকারী।
বর্ষাকালের বৈশিষ্ট্য
মৌসুমী বায়ু প্রবাহের অংকের গুলোতে উদযাপিত একটি ঋতু হচ্ছে বর্ষাকাল। বৃষ্টিপাত
হয় প্রভাবে সক্রিয় হওয়ার প্রবলতার কারণে। বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী আষাঢ় ও
শ্রাবণ এই দুই মাস মিলে বর্ষাকাল। বর্ষাকালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
বর্ষাকালের আকাশে ঘন কালো মেঘ, মেঘ গুরগুর গর্জন যারা
বর্ষাকাল পছন্দ করে তাদের মনে একটা সুন্দর অনুভূতির সৃষ্টি করে। বৃষ্টি হলেই
যেন তাদের মন আনন্দে ভরে উঠে। বর্ষাকালে প্রকৃতি এক অপরূপ সৌন্দর্যে সেজে ওঠে।
গ্রীষ্মকালের তীব্র গরমের পর যখন বর্ষাকালের আগমন ঘটে তখন সবার মন আনন্দে ভরে
ওঠে।
বর্ষাকাল সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
বর্ষাকালে বাতাসে হলেও বাষ্পে পরিমাণ বেশি থাকে।
বর্ষাকালে প্রকৃতি এক অপরূপ সৌন্দর্যে সেজে ওঠে।
বর্ষাকালের সময় নিমাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হতে দেখা যায়।
বর্ষাকালের বায়ু থাকে অত্যন্ত নির্মল প্রকৃতির।
বর্ষাকালে কেয়া ফুল এবং কদম ফুল ফুটে।
বর্ষাকালে জমির ফসল ফলন ভালো হয়।
বর্ষাকালে প্রকৃতি সবুজে সবুজময় হয়ে উঠে।
জীবন ধারণের উপযোগী উত্তম আবহাওয়া। বর্ষাকালে আবহাওয়া গ্রীষ্মকালের থেকে কম
গরম এবং শীতকালের থেকে কম ঠান্ডা থাকে।
বর্ষাকালে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর, ডোবা তোদের পানিতে ভরে থাকে।
অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে অনেক সময় বন্যা হয়। বন্যার পানিতে ফসলি জমি
ডুবে যায় এবং শুকানোর সময় সমস্ত ক্ষতিকর পদার্থ বন্যার পানি দূর করে নিয়ে
যায়।
বাংলাদেশের বর্ষাকাল কবে
বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাস মিলে গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মকালের পরেই বর্ষাকালের আগমন ঘটে।
আষাঢ় ও শ্রাবণ মাস মিলে হয় বর্ষাকাল। বাংলা আষাঢ় মাস হয় ইংরেজি জুন-জুলাই
মাসের সমন্বয়ে এবং শ্রাবণ মাস হয় ইংরেজি জুলাই-আগস্ট মাসের সমন্বয়ে। সুতরাং
বলা যায় ইংরেজি কালেন্ডারের জুন থেকে আগস্ট মাস
পর্যন্ত সময় হচ্ছে বর্ষাকাল। এই সময়ের মধ্যে বর্ষাকালের আগমন ঘটে।বসন্তকে বলা
হয় ঋতুরাজ। প্রকৃতির রানী বলা হয় বর্ষাকালকে। মানুষ যখনা চৈত্র, বৈশাখ,
জ্যৈষ্ঠের খরা তাতে অতিষ্ঠ তখন বর্ষাকাল নিয়ে আসে স্বস্তি।
বর্ষাকালের উপকারিতা অনেক। বর্ষাকাল প্রাণী ও প্রকৃতির জন্য ভীষণ উপকারী।
প্রকৃতি বর্ষাকালে এক নতুন রূপে সেজে ওঠে। চারিদিক সবুজে সবুজময় হয়ে উঠে।
আবহাওয়া বেশ সুন্দর থাকে গরম ও শীতের মাঝামাঝি অবস্থায়। বর্ষাকাল বৃষ্টির
প্রেমী মানুষদের মনে এক অদ্ভুত আনন্দে জাগরণ করে।
বর্ষাকালে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায় এবং জমির ফলন ভালো হয় এই জন্য বর্ষাকাল
কৃষকদের মনে আনন্দ বয়ে আনে। বর্ষাকালে গাছপালার বৃদ্ধি খুব ভালো হয়।
গ্রীষ্মকালের খরায় যখন নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যায় বর্ষাকালের বৃষ্টিতে
তখন নদী-নালা,খাল-বিল পানিতে ভরে ওঠে। বর্ষাকালে যখন
আকাশ ঘন কালো মেঘে সেজে ওঠে এবং এবং মেঘের গর্জন হয় তখন যেন সবার মনে আনন্দের
এবং প্রশান্তি সৃষ্টি হয়। বর্ষাকালে অনেক রকম সবজি, বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফুল
পাওয়া যায়। বর্ষাকালের প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ার জন্য এই সময় প্রকৃতিকে
অনেক ধরনের ফুল ফোটে। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানিতে
পুকুর খাল বিল বৃষ্টির পানিতে ভরে থাকে তাই এ সময় শাপলা ও পদ্ম ফুল বেশি
পরিমাণে উঠতে দেখা যায়। এছাড়াও বর্ষাকালে সাদা রঙের সুগন্ধি ফুল হলে দেখা
মেলে। এরমধ্যে রয়েছে বেলি ফুল,সাদা কাঠ গোলাপ, দোলনচাঁপা, কামিনী, মালতি,
বকুল, জুঁই, গন্ধরাজ, রজনীগন্ধা, স্পাইডার লিলি ইত্যাদি।
আবার কিছু গন্ধবিহীন ফুলেরও দেখা মিলে বর্ষাকালে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে শাপলা,
টগর, চীনা টগর, কুন্দ, শ্বেত কাঞ্চন, কাঠ টগর ইত্যাদি।
বর্ষাকালের ফল
বর্ষাকালের উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক। বর্ষাকালে বেশ কিছু উল্লেখ্যযোগ্য
পাওয়া যায়। ফলগুলো হচ্ছে ড্রাগন, জাম্বুরা, লটকন, আমড়া, জামরুল, কারমোচা
কামরাঙ্গা, গাব ইত্যাদি। নিচের ফল গুলোর উপকারি দিক সহ ব্যাখ্যা করা হলো:
ড্রাগন ফলঃ ড্রাগন ফল পিতায়া নামে ও পরিচিত। আরো একটি নাম হচ্ছে
স্ট্রবেরি নাশপাতি বা নানেট্টিকা ফল। বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ
করা। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি।
জাম্বুরাঃ জাম্বুরা এক ধরনের লেবু জাতীয় টক মিষ্টি ফল। আরেক নাম
হচ্ছে বাতাবি লেবু। এটি এক ধরণের দেশীয় ও অ প্রচলিত ফল। যা ঔষধিগুন সম্পন্ন
এবং পুষ্টিগুনে ভরপুর। এটি ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল। ঠান্ডা, সর্দি জ্বর জনিত
সমস্যার কারণে জাম্বুরা খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। নিয়মিত জাম্বুরা খেলে
দূর হয় ও পেটে নানারকম হরমোন জনিত সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়।
লটকনঃ লটকন এক ধরনের জাতীয় ফল। বাংলাদেশে বর্তমানে নরসিংদী জেলা সদর, রায়পুরা,শিবপুর ও পেলাম উপজেলায় সবচেয়ে বেশি রক্ষণ চাষ হয়। লটকনে রয়েছে ভিটামিন বি2। ভিটামিন বি2 শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। এছাড়াও রয়েছে আয়রন বা লৌহ। যা শরীরে রক্ত শূন্যতা দূর করে। এছাড়া এই ফল খেলে বমি বমি ভাব ও তৃষ্ণা নিবারণ হয়।
আমড়াঃ আমরা একটি ভিটামিন বি ও
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। এটি টক মিষ্টি সাদ যুক্ত। এতে রয়েছে পেকটিম জাতীয়
ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান। আমড়ার বীজ কাটাযুক্ত। এটি
কাঁচা, পাকা বা আচার বানিয়ে খাওয়া যায়।
জামরুলঃ এটি একটি অত্যন্ত আর্কষনী ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। এটি গ্রীষ্মকালীন ফল দেখতে অনেকটা নাশপাতির মতো। জামরুল একটি রসালো এবং হালকা মিষ্টি সাদ যুক্ত। ভিটামিন বি২ সমৃদ্ধ ফল। এই ফলটি বহুমূত্র রোগের তৃষ্ণা নিবারণের অনেক উপকারী। এছাড়াও জামরুল ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
বর্ষাকালের সবজি
বর্ষাকালে সবজি পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে করলা, ঝিঙা, লাউ, মিষ্টি
কুমড়া, চাল কুমড়া, বরবটি, ঢেঁড়স, শসা ইত্যাদি। নিচে এই সবজিগুলোর পুষ্টিগণ
সম্পর্কে ব্যাখ্যা করা হলো :
করলা
করলা একটি বর্ষাকালীন সবজি। বর্ষাকালে বেশ ভালো জন্মায়। করলা ডায়াবেটিসের
মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে অত্যন্ত কার্যকারী একটি সবজি। তাছাড়া অ্যাজমা এবং
গলার প্রদাহের জন্য করলার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া
যায়। এটি তিতা স্বাদ যুক্ত হলেও এর উপকারিতা অনেক। করলায় রয়েছে বিটামিন
সি, ভিটামিন এ এবং অক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
এবং ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
ঝিঙা
ঝিঙা ও বর্ষাকালীন সবজি গুলোর মধ্যে একটি। উষ্ণ আবহাওয়ায় এটি ভালো জন্মে।
এইতো রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ ও আন্টি অক্সিডেন্ট। এটি পাকস্থলীর
কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং সর্দি কাশি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব রাখে।
বিভিন্নভাবে খাওয়া যায় ভাজা, তরকারি বা ভর্তা হিসেবে। এটি চাষে উপযুক্ত
সময় হল জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর। এর জন্য অবশ্যই মাটির উর্বর হতে হবে।
লাউ
লাউ বর্ষাকালের একটি সবজি যা বাংলাদেশের ব্যাপক চাষ হয়। লা একটি সুস্বাদু ও
পুষ্টিকর সবজি। এটি বিভিন্নভাবে চাষ করা যায়। ছাদ বাগানেও এর ব্যাপক চাষ
হয়। এইতো রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি নিরামিষ এ ভিটামিন কে এবং
পটাশিয়াম। লাউ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। হাটকে সুস্থ রাখতে
সাহায্য করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও বেশ কার্যকর। এতে ক্যালরি কম থাকায়
এটি ওজন কমাতেও বেশ কার্যকর। নিয়মিত তরকারি খেলে শরীরের অজানা রোগের সমাধানও
পাওয়া যায়।
মিষ্টি কুমড়া
মিষ্টি কুমড়া তার নামের মত স্বাদেও মিষ্টি। এটি একটি বর্ষাকালীন সবজি।
মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে কম পরিমাণ ক্যালরি এবং বেশি পরিমাণ ফাইবার। যার কারনে
এটি শরীরের ওজন কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এছাড়া মিষ্টি কুমড়া রয়েছে
ভিটামিন সি, বি৬, ভিটামিন এ। যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ বেশ
কার্যকর। ভিটামিন এ দৃষ্টির শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
চাল কুমড়া
এটি একটি বর্ষাকালীন সবজি। চাল বর্ষাকালীন আবহাওয়ায় বেশ ভালো জন্মায় খুব
সহজে চাষ করা যায়। চাল কুমড়া রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। চাল কুমড়া দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে হজম শক্তি বৃদ্ধিতে
দাঁত ও হাড়কে শক্তিশালী করতে, রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে বেশ কার্যকর।
শসা
শসা বর্ষাকালীন অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সবজি। শসা চাষে উপযুক্ত সময় হলো জুলাই
থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। শসা বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায় এমনি এমনি খালি মুখে
খাওয়া যায়, সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়, তরকারির হিসেবে খাওয়া যায়। এছাড়া
রূপচর্চার কাজেও শসা ব্যাপক ব্যবহৃত হয়। শসায়ে রয়েছে ভিটামিন সি ভিটামিন
এ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বেশ
কার্যকর। এছাড়া কিডনি রোগীদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
বর্ষাকালের অপকারিতা
বর্ষাকাল যেমন আমাদেরও প্রকৃতির জন্য বেশ উপকারী তেমনি অপকারীও। বর্ষাকালে
অতি বৃষ্টির কারণে মানুষ, পশু, পাখি সহ প্রভৃতির অনেক ক্ষতি সাধন হয়।
বর্ষাকালে অতি অতি বৃষ্টির কারণে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় যেতে পারে না।
শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। যারা চাকুরীজীবী তারা
তাদের অফিসে সঠিক সময় যেতে পারে না। অন্যান্য কর্মজীবীরা তাদের কর্মস্থলে সঠিক সময়ে যেতে পারে না। যার ফলে আর্থিক অবস্থার অবনতি ঘটে। আবার অনেক রিক্সা চালক ও দিনমজুরদেরকে বৃষ্টির পানিতে ভিজে ভিজে তাদের নিজেদের কাজ করতে হয় টাকা উপার্জন করতে হয়। এতে দীর্ঘক্ষণ
বৃষ্টির পানিতে ভিজে থাকার কারণে তারা শারীরিক ভাবে অসুস্থ যেতে পারে। তাই এসব মানুষদের কাছে বর্ষাকাল অপকারী। এছাড়া বর্ষাকালে ঝড়ে যাদের মাটি টিনের চালার বাড়ি অনেক সময় গাছপালা ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়া বন্যার পানিতে অনেক সময় ফসলি জমি বাড়িঘর ডুবে যায় যার ফলে
মানুষের অনেক ক্ষতি হয়। অনেক সময় পশু পাখিরাও বন্যার পানিতে ভেসে যায়। বন্যার সময় অনেক বাড়িঘরের মধ্যে বন্যার পানি ঢুকে যায় যার ফলে মানুষ সহজে চলাচল করতে পারে না ঠিকমত খাবার খেতে পায় না বিভিন্ন আক্রান্ত হয়। এইসব বিভিন্ন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় বর্ষাকালে। বর্ষাকালে
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় পশু পাখিরা ও খেটে খাওয়া মানুষজন। তাই
বর্ষাকালের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও অনেক।বর্ষাকালে বিভিন্ন ধরনের
রোগ বালাইয়ের সংক্রমণ বেশি হয়। বর্ষাকালে অতি বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন রোগে
আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। এ সময় ডায়রিয়া, ডেঙ্গু, টাইফয়েড,
চিকুনগুনিয়া, ভাইরাস ফিভার, ইনফেকশন ইত্যাদি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার
সম্ভাবনা বেশি থাকে। নিচে কারণ সহ রোগগুলো ব্যাখ্যা করা হলো :
ডায়রিয়া
ডায়রিয়া রোগের মূল কারণ হচ্ছে দূষিত পানি পান করা। তাই বর্ষার সময় বাইরের
খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকাই ভালো। কারণ বাইরের খোলা খাবার অপরিশোধিত পানি
থেকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে।
ডেঙ্গু
ডেঙ্গু ম্যালেরিয়ার মতোই একটি মশাবাহিত রোগ। এটি বেশ কয়েক বছর ধরে বর্ষা
শুরু থেকেই মারাত্মক আকার ধারণ করছে। এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ। ডেঙ্গু হলে
রোগীরা অতিরিক্ত জ্বর, গায়ে ব্যাথা, দুর্বলতা ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যায়
পরেন।
টাইফয়েড
বর্ষাকালে সালমোনলা টাইফোসা ভাইরাসের কারণে এই রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়।
অপরিচ্ছন্ন ও অপরিশোধিত পানি থেকে টাইফয়েড রোগের সংক্রমণ ছড়ায়।
চিকুনগুনিয়া
অ্যাসিড অ্যালবোপিকটাস মশার কামড়ে জন্য চিকুনগুনিয়া রোগ হয়। বর্ষাকালের
জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে এই মশা ডিম পাড়ে ও দিনের আলোয় কামড়ায়। এটি মাঝে
মাঝে ব্যাপক আকার ধারণ করে। তাই বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি জমাট বাধলে সেটি অতি
দ্রুত ফেলে দিতে হবে।
ইনফেকশন
বর্ষাকালে রাস্তা বা ফুটপাতের জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে ভিজলে হাতে পায়ে
বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন দেখা দিতে পারে।এছাড়া বর্ষাকালে রাস্তার খোলা খাবার
থেকে গ্যাস্ট্রো এন্টারাইটিস বা পেটের ইনফেকশনের সমস্যা খুব বেশি পরিমাণে
হয়ে থাকে।
লেখক এর মন্তব্য
আমরা এতক্ষণ বর্ষাকালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। বর্ষাকালের
যেমন উপকারিতা অনেক তেমনি অপকারিতা অনেক। বর্ষাকালে পশুপাখি ও সমুদ্রের
তীরবর্তী প্রচুর ক্ষতিসাধন হয়। অনেকের ঘরবাড়ি ডুবে যায়, ঠিক মত তিন বেলা
খাবার খেতে পারে না বিভিন্ন অসুখের সংক্রমিত হয় এইসব বিভিন্ন সমস্যার
সম্মুখীন হতে হয় বর্ষাকালে। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম
আরো অনেক তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।
https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html
comment url