ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ
ডায়াবেটিস হলে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা প্রয়োজন হয়। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে বিভিন্ন ধরনের বিপদে পড়তে হয়। স্বাস্থ্যকর
খাদ্য অভ্যাস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। আজকের আর্টিকেলটিতে ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ সেই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ, সুগারের মাত্রা কত হলে বুঝবেন ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
খাদ্য অভ্যাস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। আজকের আর্টিকেলটিতে ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ সেই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ, সুগারের মাত্রা কত হলে বুঝবেন ডায়াবেটিস সম্পর্কে জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
.
ভূমিকা
আমাদের শরীরে রক্তে যখন গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় তখন আমরা ডায়াবেটিস হয়েছে বলে বিবেচনা করি। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খালি পেটে ডায়াবেটিস কত থাকে , ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল সে সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।
ডায়াবেটিস কি
ডায়াবেটিস হলো এমন একটি রোগ যা রক্তে সুগারের মাত্রা তুলনায় অনেক বাড়িয়ে দেয়। মানুষের শরীরে ইনসুলিন নামও হরমোনের কারণে ডায়াবেটিসের লক্ষণ প্রকাশ পায়। ইনসুলিন নামক হরমোন এর মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গেলে তখন আমরা সেটিকে ডায়াবেটিস বলে বিবেচনা করি। এই ইনসুলিন হরমোনটি রক্তের সুগারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
ডায়াবেটিস প্রধানত দুই প্রকার। যথা:
- টাইপ-১
- টাইপ-২
গ্লুকোমিটারে ডায়াবেটিস মাপা
ডায়াবেটিস কত হলে স্বাভাবিক তা কোন পদ্ধতিতে মেপেছেন তার ওপর। সাধারণত বাড়িতে বা ফার্মেসিতে গ্লুকোমিটারের সাহায্যে আঙুলের ডগা থেকে রক্তনালী থেকে ডায়াবেটিস পরিমাপ করা হয়। হাসপাতালে ল্যাবে শিরা থেকে রক্ত নিয়ে সুগার পরিমাপ করা হয়। গ্লুকোমিটারে মাপা ব্লাড সুগার
এই পয়েন্ট সামান্য বেশি আসতে পারে। গ্লুকোমিটারের ডায়াবেটিস মাপা যদি একটা সুস্থ মানুষ গ্লুকোমিটারে ডায়াবেটিস মাপেন তাহলে রক্ত সুগারের মাত্র খাবার আগে ৪ -৬ পয়েন্ট ও ২ ঘণ্টা পর ৮ পয়েন্টের নিচে হলে তো ডায়াবেটিস ধরা বলে হয়।
আরো পড়ুনঃ তাৎক্ষনিক ভাবে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়
হাসপাতালের ল্যাবে ডায়াবেটিস মাপা
হাসপাতালে ল্যাবে ডায়াবেটিস মাপার জন্য খালি পেটে আপনার শিরা থেকে নেওয়া রক্তের সুগারের মাত্রা আমি ৫.৫ পয়েন্ট (mmol/l) এর আশেপাশে থাকা ভালো। সুগারের মাত্রা যদি ৬.১ থেকে ৬.৯ পয়েন্ট এর মধ্যে থাকে তাহলে এই অবস্থাকে প্রি-ডায়বেটিস বলে। প্রি ডায়াবেটিস বলতে এমন অবস্থাকে
বোঝার যে যখন আপনার টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হয় এবং হৃদরোগ সহ অন্যান্য বিভিন্ন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এ অবস্থাকে আপনি সতর্কবার্তা হিসেবে ধরে নিয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের) দিকে মনোযোগী হতে পারেন।
খালি পেটে ডায়াবেটিস কত থাকে
খালি পেটে রক্তের সুগারের মাত্রা সাধারণত পয়েন্ট 5.5 (mmol/l) এর আসেপাশে হয়। যদি কারো রক্তে সুগারের মাত্রা ৫.৫ থেকে ৬.৯ (mmol/l) এর মধ্যে হয় তাহলে এ অবস্থায়কে প্রি ডায়াবেটিস বলে। এবং যদি কারো রক্তের সুগারের পরিমাণ ৭ (mmol/l) এর উপরে চলে যায় তাহলে ডায়াবেটিস হিসেবে গণ্য হয়।
ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
যদি ভরা পেটে রক্তে সুগারের মাত্রা কিছুটা বেড়ে যায় তাহলে সেটা স্বাভাবিক। সুগারের মাত্রা যদি ৭.৮ (mmol/l ) এর বেশি হলে একে প্রি ডায়াবেটিস ধরা হয়। এবং যদি ১১.১ বেশি (mmol/l) এর বেশি হলে তা ডায়াবেটিসের মাত্রায় চলে যায়। এমন সময় অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
সুগারের মাত্রা কত হলে বুঝবেন ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিস সাধারণত দুইটি ধাপের পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায় আপনার ডায়াবেটিস আছে কিনা। এর জন্য প্রথমে খালি পেটে রক্তে সুগারের মাত্রা দেখতে হবে কত? যদি খালি পেটে মাত্রা 7 (mmol/l) এর উপরে চলে যায় তাহলে আমরা তাকে ডায়বেটিস বলে থাকি। তবে এটিতে নিশ্চিত হওয়া যায় না আরও
আরো পড়ুনঃ সজনে পাতার উপকারিতা কি
একটি পরীক্ষা করতে হয়। এর জন্য খাবার দুই ঘন্টা পর বা ভরা পেটে রক্ত সুগারের মাত্রা আরো একবার পরীক্ষা করা প্রয়োজন। ভরা পেটে বা খাবার দুই ঘন্টা পরে যদি রক্তে সুগারের মাত্রা ১১.১ (mmol/l)এর বেশি হয় তাহলে তাকে ডায়াবেটিস বলে ধরা হয়।
ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ
শরীরে যখন ইনসুলের নামক হরমোনের কাজে ব্যাঘাত ঘটে তখন রক্তের সুগার বেশি হয়ে যায়। ইনসুলিন শরীরে রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ইনসুলিন উৎপন্ন হয় পাকস্থলীর পেছনে থাকা অগ্নাশয় বা প্যানক্রিয়াস নামক গ্রন্থি থেকে। যখন খাবার মানুষের শরীরে প্রবেশ করে তখনইনসুলিন রক্ত থেকে সুগার গ্লুকোজ কে কোষের ভিতরে ঢুকিয়ে সেটাকে ভেঙে শক্তি উৎপাদন করে। কিন্তু ডায়াবেটিস হলে আপনার সুগার তথা গ্লুকোজ কে ভেঙে এভাবে শক্তি উৎপাদন করতে বা হতো হয়। যার ফলে রক্ত অনেক সময় সুগার বেড়ে যায় আবার আবার সুগার কমে যায়। সুগার অতিরিক্ত কমে
যাওয়া বা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া দুইটাই বিপদের কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত সুগার কমে শরীল অনেক সময় নীল হয়ে যায় যার ফলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে। এমন অবস্থায় আপনাকে দ্রুত একটি কাজ করা লাগবে সেটি হচ্ছে অল্প পরিমাণ চিনি রোগীকে খাওয়াতে হবে। এতে রোগীর প্রাণের অসংখ্য থেকে বেঁচে
যাবে। আবার অনেক সময় অতিরিক্ত ডায়াবেটিস এর মাত্রা বেড়ে যায়। সঠিক সময় চিকিৎসা না হলে রোগী মারা যেতে পারে। যখন দেখবেন ডায়াবেটিস অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়ে গেছে তখন অবশ্যই ইনসুলিন এর ইঞ্জেকশন করা লাগবে। তা না হলে রোগীর প্রাণের অসংখ্য থাকে। অনেক সময় ওর
শরীরের অতিরিক্ত ওজন, শ্রমের অভাব,অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এর কারণেও ডায়াবেটিসের মাত্রা বেশি থাকতে পারে। এর জন্য অবশ্য আপনাকে নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপন করতে হবে। তা না হলে যে কোন সময় যেকোনো বিপদ ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
এখন অনেকের মনে প্রশ্ন জানতে পারে সুগার কমানোর ঘরোয়া কোন উপায় আছে কি? হ্যাঁ অবশ্যই আছে জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস বিভিন্ন দিক থেকে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, তুলনামূলকভাবে অপর্যাপ্ত ইনসুলিন এবং প্রতিক্রিয়াশীলতার সংমিশ্রণে জড়িত থাকে। এটি সমস্ত গর্ভাবস্থায় প্রায় ২-১০% হয়ে থাকে এবং বাচ্চা প্রসবের পরে উন্নতি বা অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে। অনেকের
ডায়াবেটিস আগে না থাকলেও গর্ভাবস্থায় কারো কারো ডায়াবেটিস দেখা যায়। গর্ভবতী মেয়েদের জন্য একটি পরামর্শ হচ্ছে গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করোনো। গর্ভকালীন সময়ে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। প্লাসেন্টা থেকে যে হরমোন গুলো তৈরি হয় সেগুলো ইনস্টলমেন্টে কাজ
করতে দেয় না। তাই সেটি যখন শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায় তখন এই ফিল্ম তার কার্য ক্ষমতা ফিরে পায় ব্লাড সুগার কোন এজেন্ট ছাড়াই ভালো হয়ে যায়। গর্ভকালীন ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে স্ক্রীনিং বোঝা যায় সর্বকালীন ডায়বেটিস আছে কি না সময় গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের মধ্যে স্ক্রিনিং করে
ডায়াবেটিস শনাক্ত হয়। যেসব নারীদের উচ্চ ঝুঁকি আছে তাদের প্রথম ফলোআপের এর সময় স্ক্রিনিং টেস্ট করে নেওয়া উচিত যে ডায়াবেটিস আছে কি নেই। ডায়াবেটিস রোগটি ধরা পড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে প্রেগনেন্সির পুরো সময় পার করা উচিত।
সুগার কমানোর ঘরোয়া উপায় কি
কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো আপনার ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকতে পারে। যেমন আপনি প্রতিদিন যদি মেহেগুনি ফলের বিচি একটি বা কয়েকটি খেতে পারেন, নিম পাতা, করলা ইত্যাদি যদি নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রিত থাকতে পারে। এছাড়া আপনার যদি
ডায়াবেটিসের মাত্রা সব সময় বেশি থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ সেবন করবেন করতে হবে বা ইনসুলিন ইনজেকশন করতে হবে। ডায়াবেটিস রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব হয় না নিয়ন্ত্রিত থাকলে শরীর ভালো থাকে। বিভিন্ন গবেষণায় অতিরিক্ত ওজন এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাবের সাথে
ডায়াবেটিস এর যোগসূত্র পাওয়া বলে গবেষকরা জানান। তাই ওজন কমানো হতে পারে ঘরোয়াভাবে ব্লাড সুগার কমিয়ে আনার একটি কারণ হতে পারে। চলুন ওজন কমানোর কিছু খাবার সম্পর্কে জানা যায় -
ওজন কমানোর খাবার
ওজন কমানোর জন্য একটি সুষম খাদ্য তালিকা মেনে চলা প্রয়োজন। খাদ্য তালিকা এমন হতে হবে জানো সেখানে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় এবং পরিমাপ পরিমিত কেন ওজন কমাতে সাহায্য করে। ওজন কমানোর খাদ্য তালিকা পেতে নিচে নীল লিখাটির উপরে ক্লিক করুন এবং আর্টিকেলটি পড়ুন।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
ওজন কমানোর ব্যায়াম
ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত ওজনের ফলে ডায়াবেটিস এর মাত্রা সব সময় বেশি থাকে। তাই শরীরের ওজন কমানো অত্যন্ত প্রয়োজন। প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ব্যায়াম করার চেষ্টা করতে হবে। এছাড়া আপনি জিমে যেতে পারেন। নিয়মিত জিমে গেলে আপনার শরীরের ওজনঅনেকটা হ্রাস হবে। এছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রতিদিন সকাল বেলা ও বিকেল বেলা নিয়মিত যখন জোরে জোরে হাঁটা প্রয়োজন। এতে ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রিত থাকে। এছাড়া আপনি বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন।
মন্তব্য
আর্টিকেলটিতে ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ, সুগার কমানোর ঘরোয়া উপায় কি , গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল সে সম্পর্কে উপরে জানলাম। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আশা করি এইসব তথ্য জেনে উপকৃত হবেন। এতক্ষণ আমার ওয়েবসাইটের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html
comment url