অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি

অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি, অশ্বগন্ধা হচ্ছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়ুর্বেদিক ভেষজ। অশ্ব মানে হচ্ছে ঘোড়া এবং গন্ধ মানে গন্ধ, থেকে অশ্বগন্ধ নামটি এসেছে। অশ্বগন্ধার মূল বা শিকড়ের
গন্ধ অনেকটা ঘোড়ার প্রস্রাবের বা ঘামের গন্ধের মত। অশ্বগন্ধার উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম হচ্ছে উইথানিয়া সমনিফেরা। অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি, মহিলাদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা , অশ্বগন্ধার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

প্রাচীনকাল থেকে অশ্বগন্ধার বীজ, শিকড় ও পাতা দিয়ে আয়ুর্বেদিক ঔষধ তৈরি হয়ে আসছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, আফ্রিকা, স্পেন মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে অশ্বগন্ধা পাওয়া যায়। অশ্বগন্ধা আর নানা রোগের ঔষধের কাজ করে।
.

অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি - অশ্বগন্ধা কিভাবে কাজ করে

  • অশ্বগন্ধা একাধিক পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। ভেষজ হিসেবে অশ্বগন্ধা সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয়। অশ্বগন্ধা বিভিন্নভাবে কাজ করে। চলুন অশ্বগন্ধা কিভাবে কাজ করে তা জানা যাক -
  • শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে। বিভিন্ন রোগবালার প্রতিরোধ করতে।
  • মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে ব্যবহার করা হয় বলে একে অ্যাডাপ্টোজেন বলা হয়।
  • অশ্বগন্ধায় ক্যান্সার প্রতিরোধী কিছু উপাদান রয়েছে। যা ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
  • যারা রিউম্যাটেড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত তাদের রোগ কমাতেও অশ্বগন্ধা কার্যকরী।
  • শরীর পরিষ্কার রাখতে এবং অকল বার্ধক্যের উপসর্গ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • অশ্বগন্ধা জীবনীশক্তি ও যৌনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষভাবে কার্যকরী।
  • শক্তি বর্ধক হিসেবে অশ্বগন্ধা শরীর উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।
  • অশ্বগন্ধা মূত্রবর্ধক হাওয়াই শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল বা লবণ বের করতে সাহায্য করে।

অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি- অশ্বগন্ধা ও হরমোনের ভারসাম্য

অশ্বগন্ধা এমন একটি উদ্ভিদ যা আমাদের দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। হরমোন গুলো আমাদের শরীরে বার্তাবাহকের মতো কাজ করে, যা আমাদের শরীরকে নির্দেশ দেয় কখন কি করতে হবে। এমন অনেক সময় দেখা যায় কখনো কখনো কিছু কিছু জিনিস আমাদের
ভারসামের বাইরে চলে যেতে পারে এতটা দুর্দান্ত অনুভব না ও করাতে পারে। কিন্তু অশ্বগন্ধা সেটি ঠিক করতে সাহায্য করতে পারে। অশ্বগন্ধা আমাদের শরীরকে আরো ভালো করতে এবং তাদের উচিত যেভাবে কাজ করতে সহায়তা করার একটি প্রাকৃতিক উপায়। অনেক মানুষ আছে যারা অশ্বগন্ধা নিরাপদ কিনা বা এটি তাদের জন্য একটি পার্থক্য করতে পারে কিনা তা দেখার চেষ্টা করছেন।

অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি

চলুন অশ্বগন্ধার উপকারিতা সম্পর্কে জানা যাক -

অশ্বগন্ধার উপকারিতা

  • অশ্বগন্ধা সর্দি কাশি সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
  • চোখের ব্যথা দূর করতে একটি কার্যকরী উপাদান।
  • অশ্বগন্ধার গুড়া খেলে ভালো ঘুম হয়।
  • শুক্রাণু তৈরিতে অশ্বগন্ধা খুব ভালো কাজ করে থাকে।
  • অশ্বগন্ধা শরীরের টেস্টোস্টেরন ও প্রোজেস্টেরনের এর পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।
  • অশ্বগন্ধায় অ্যানজাইলেটিক উপাদান রয়েছে যার এটি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • অশ্বগন্ধা হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
  • অশ্বগন্ধা পেট ফাঁপা পেটের ব্যথা এবং যকৃতের জন্য ভীষণ উপকারী একটি ফল।
  • অশ্বগন্ধায় রয়েছে আন্টি অক্সিজেন দিয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

মহিলাদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা

অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি, মহিলাদের জন্য অশ্বগন্ধার বেশ কিছু উপকারী প্রভাব রয়েছে। অশ্বগন্ধা হচ্ছে একটি বিশেষ ভেষজ। যা অ্যাডাপ্টোজ নামক একটি গ্রুপের অন্তর্গত। প্রাচীনকাল থেকে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে। বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত অনুসন্ধান করছেন যে এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য কতটা ভালো কাজ করে। মহিলাদের জন্য উপকারী। অশ্বগন্ধা ঘুম, স্ট্রেস, শক্তির মাত্রার মতো জিনিস গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। চলুন মহিলাদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা গুলো জানা যাক-

ঘুমের উন্নতি ঘটাতে
বর্তমান সময়ে ছেলে মেয়ে উভয়েরই বিভিন্ন কারণে সমস্যা হয়।পর্যন্ত পরিমাণে ঘুম না হলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। অশ্বগন্ধা মানসিক চাপ উত্তেজনা দুশ্চিন্তা কমিয়ে সুনিদ্রায় সাহায্য করে।

থাইরয়েড প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করতে
অধিকাংশ মহিলারা ছেলেদের তুলনায় বেশি থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে অশ্বগন্ধা T4 এর মাত্রা বৃদ্ধি করতে এবং হাইপোথাইরয়েডিজম কমাতে সাহায্য করে। যার ফলে থাইরয়েডে আক্রান্ত রোগীদের অশ্বগন্ধা বিশেষভাবে সাহায্য করে।
কেশ টনিক হিসেবে
অশ্বগন্ধা চুলের পুষ্টি জোগাতে চুল পড়া রোধ করতে চুলকে দীর্ঘ এবং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে । অশ্বগন্ধে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অকালে চুল পাকা এবং চুল পড়া বন্ধ করে। অশ্বগন্ধা চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগাই এবং শক্ত করে। অশ্বগন্ধা আন্টি অক্সিডেন্ট এবং পুষ্টিকর প্রভাবের দারুন। তাই এটি আদর্শ কেশ টনিক হিসেবে কাজ করে।

অ্যাড্রিনাল ফেটিগ প্রতিরোধে
মেয়েদের মধ্যে এটি প্রায় দেখা যায় যে অনেক মেয়ে প্রায় সব সময় ক্লান্তি বোধ করে। এর কারণ হচ্ছে অ্যাড্রিনাল ফেটিগ। অ্যাড্রিনাল ফেটিগ প্রতিরোধে অশ্বগন্ধা বিশেষ ভূমিকা রাখে।

মাসিক চক্র নিয়মিত করতে
মহিলাদের ক্ষেত্রে বিলম্বিত বা অনিয়মিত পিরিয়ড, পিরিয়ডের ব্যথা, প্রজনন সমস্যা, প্রজনন সমস্যা বা মেনোপজের সময় পরিবর্তন হওয়া সাধারণ ব্যাপার। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্য এইসব বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। অশ্বগন্ধা এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। অশ্বগন্ধা এসব

হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে, অ্যাডিনাল গ্রন্থিগুলোকে শক্তিশালী করতে রক্তের প্রবাহ উন্নত করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। পিরিয়ডের ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে, উর্বরতা উন্নত করতে এবং মাসিকের সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে অশ্বগন্ধা।

মেনোপজ সমস্যা প্রতিরোধ করতে
নারীরা যখন ৪০ বছর এর উর্ধ্বে যায় তখন তাদের মেনোপোজ হয়। মেনোপোজ এর সময় প্রায় মহিলায় হরমোনের ভারসাম্যহীনতার সম্মুখীন হয় যার কারণে তাদের মধ্যে উদ্বেগ, গরম ঝালকানি, বিষন্নতা ও ঘুমের সমস্যাসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অশ্বগন্ধা যেহেতু হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে তাই মেনোপোজ এ সময়ে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং এই উপসর্গগুলোকে সহজ করতে পারে।

মহিলাদের উর্বরতার জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা

মহিলাদের উর্বরতার জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা অনেক। অশ্বগন্ধা বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বন্ধ্যাত্ব হচ্ছে একজন মহিলা যখন গর্ভবতী হতে পারে না বা গর্ভবতী হতে সমস্যা হয় সে অবস্থা। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি হতে পারে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্য, শারীরিক সমস্যার

মত বিষয়গুলোর কারণে। অশ্বগন্ধা মতো আয়ুর্বেদিক ভেষজ ব্যবহার করা উর্বরতা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু কিভাবে অশ্বগন্ধা গর্ভধারণে চেষ্টা করা মহিলাদের সাহায্য করে? এই প্রশ্ন অনেকের মধ্যে জাগতে পারে। চলুন সঠিক তথ্য জানা যাক, অশ্বগন্ধায় অনেক সক্রিয় পদার্থ রয়েছে। 
যেমন: অ্যাসিড, আমিনো অ্যাসিড যা শরীরের জন্য উপকারী।অশ্বগন্ধার শিকড় গুলোতে এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অন্তঃস্রাব সিস্টেমকে উন্নত করতে পারে, যার মধ্যে প্রজনন হরমোন গুলোকে প্রভাবিত করে। সুষম হরমোন উর্বরতার জন্য অশ্বগন্ধা গুরুত্বপূর্ণ। কম আয়রনের মাত্রা সহ মহিলাদের গর্ভবতী

থাকতে বা গর্ভবতী হতে সমস্যা সৃষ্টী করতে পারে। অশ্বগন্ধায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন জারনের মন্ত্র কম থাকায় সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও অশ্বগন্ধায় স্নায়ুতন্ত্রের উপর একটি শান্ত প্রভাব রয়েছে জ যা ঘুমের সমস্যা, উদ্বেগ, ক্লান্তি, বিষন্নতার মতো স্ট্রেস সম্পর্কিত সমস্যা গুলো দূর করতে সাহায্য করে। এগুলো বন্ধ্যাত্বের সাথে মোকাবেলা করা মহিলাদের জন্য সাধারণ সমস্যা।

মস্তিষ্কে কার্যকারিতার উপর ইতিবাচক প্রভাব

অনেক সময় এমন হয় যে আমরা আমাদের কাজের জিনিসগুলো কোথায় রেখেছি মনে করতে পারছি না বা ভুলে যায়। আমাদের অনেকের মধ্যে এই সমস্যাটি দেখা যায়। আবার এমনও অনেক সময় দেখা যায় আপনি কোনো কাজে মনোনিবেশ করতে পারছেন না। এমন অনুভূতি হতাশাজনক হতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অশ্বগন্ধা মস্তিষ্কের মৌলিক ফাংশন যেমন স্মৃতিশক্তি মনোযোগ এবং হাত চোখের সমন্বয়ে উন্নত করতে সাহায্য করে। একটি গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, যাদের জন্য অশ্বগন্ধা ক্যাপসুল গ্রহণ শুরু করেছিলেন আরো ভালো করেছেন। তারা নতুন জিনিস মনোযোগ দিতে এবং দৃশ্য তো

পারদর্শী ছিল। অশ্বগন্ধা হলো একটি অ্যাডাপ্টোজেন, যা মানসিক চাপ কমাতে, অনিদ্রা দূর করতে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে, প্রদাহ হ্রাস করতে, মহিলাদের রজঃচক্র নিয়ন্ত্রণ করতে মহিলাদের বিশেষভাবে উন্নত করে। তাই বলা যায় অশ্বগন্ধা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

অশ্বগন্ধা খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় কি?

অশ্বগন্ধা খাওয়ার বেশ কয়েকটি উপায় আছে। কয়েক ভাবে অশ্বগন্ধা খাওয়া যায়। এগুলো হলো:

ক্যাপসুল, তরল নির্যাস, পাউডার, চা ইত্যাদি। অশ্বগন্ধা খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় নির্ভর করবে আপনার উপর আপনি কোন উপায়ে পছন্দ করছেন এবং প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে।

ক্যাপসুল বা ট্যাবলেট : যারা অশ্বগন্ধা স্বাদ পছন্দ করেন না এবং আগে থেকে পরিমাপ করা ডোজ পছন্দ করেন তাদের জন্য এটি একটি সুবিধাজনক বিকল্প। এটি কোন ঝামেলা ছাড়াই শুধু পানির সাহায্যে গিলে ফেলতে পারেন।

তরল নির্যাস: অশ্বগন্ধ নির্যাস পান করার জন্য পানি বা রস যোগ করা যেতে পারে। এটি ক্যাপসুল এর তুলনায় জুতো শোষণ প্রস্তাব করতে পারে।

পাউডার: মহিলাদের জন্য অশ্বগন্ধার অশ্বগন্ধার গুড়া বেশ উপকারী। কারণ এটি খুব স্মুদি হয়, তাই সহজে জুস বা পানিতে মেশানো যায়। আবার কেউ কেউ উষ্ণ দুধ বা মধুর সাথে মিশেও একটি
প্রশান্তিদায়ক পানীয় তৈরি করে সহজে খেতে পারে। এই বিকল্পটি সহজে কাস্টমাইজ করার অনুমতি দেয়।

চা: অশ্বগন্ধার চা বানিয়েও খাওয়া যায়। এর জন্য গরম পানিতে অশ্বগন্ধার মূল বা গুঁড়ো দিয়ে যেভাবে চা বানাই ঠিক সেভাবে বানিয়ে নিতে হবে। এটি অশ্বগন্ধা খাওয়ার জন্য একটি উষ্ণ এবং আনন্দায়ক উপায়।

এছাড়াও অশ্বগন্ধা খাওয়ার সর্বোত্তম উপায় আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ। আপনি যেভাবে খেতে সব সুন্দর বোধ করবেন সেভাবেই খেতে পারেন। তবে এর জন্য ব্রিটিশ চিকিৎসকেরও করে পরামর্শ নিতে পারেন।

ত্বকের যত্নে অশ্বগন্ধার উপকারিতা

আমরা আগে জানলাম যে অশ্বগন্ধা একটি প্রাকৃতিক ভেষজ। অশ্বগন্ধা এমন উপাদান রয়েছে যেগুলো ত্বককে পরিষ্কার করতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটা এমন উপাদান রয়েছে যা স্নায়ুকে শান্ত করতে, স্ট্রেস বা উদ্বেগ কমাতে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অশ্বগন্ধায় থাকা উচ্চ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান বলিরেখা দূর করতে, কালো দাগের করতে লড়াই করতে এবং ব্রণ এর সমস্যা করতে সাহায্য করে। চলুন অশ্বগন্ধা ত্বকে কিভাবে কাজ করে তা জানাও যাক -

অ্যান্টি এজিং হিসেবে : অ্যান্টি এজিং হরমোনের উৎপাদন বাড়ায় ত্বককে তারুণ্য এবং হাইড্রেট রাখতে এবং ক্লোজেন বজায় রাখতে সাহায্য করে।

মশ্চারাইজিং বা ক্লিনজিং হিসেবে :অশ্বগন্ধা মশ্চারাইজিং বা ক্লিনজিং হিসেবে ব্যবহার করলে শুষ্ক ত্বককে হাইড্রেট করে, ব্রণ এবং আটকে যাওয়া ছিদ্র প্রতিরোধ করে, অমেধ্য অপসারণ করে।

নিরাময়ক হিসেবে : অশ্বগন্ধা নিরাময় হিসেবে ব্যবহার যায় কাটা /ক্ষত স্থানে, ত্বকের সংক্রমণ স্থানে ক্রিম হিসেবে ব্যবহার করলে নিরাময় পাওয়া যায়।

সাপের বিষের বিরুদ্ধে প্রতিষেধক হিসেবে অশ্বগন্ধা

সাপের বিষের (ভেনম) বিরুদ্ধে শরীরে স্বাভাবিক প্রতিরোধী ভূমিকা পালন করে থাকে অশ্বগন্ধা। বলা হয়ে থাকে অশ্বগন্ধা হচ্ছে গ্লাইকোপ্রোটিন। শরীরে হায়ালোনিডেস সাপের বিষের একটি সক্রিয় উপাদান যা বিষকে পাশের টিস্যু গুলোতে পৌঁছে দেয়, ছাড়তে দেই না। সাপের কামরের বিরুদ্ধে ভারতে প্রতিষেধক হিসেবে অশ্বগন্ধার একটি প্রলেপ ব্যবহার করা হয়। তাই সাপের বিষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ হিসেবে অশ্বগন্ধা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।

অশ্বগন্ধার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধিতে অনেক উপকারিতা থাকলেও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যার জন্য এই ভবিষ্যৎ গ্রহণের পূর্বে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরী। চলুন অশ্বগন্ধার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো জানা যাক, 
  • গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অশ্বগন্ধার ব্যবহার নিরাপদ বলে মনে করা হয় না। বেশি মাত্রাই ডোজ নেওয়ার ফলে গর্ভপাত অথবা নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রসব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • অশ্বগন্ধা রক্ত পাতলা করে এবং এটি অ্যান্টিকোঅ্যাগুলেট সম্পূর্ণ। তাই আপনার শরীর যদি অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে বা অস্ত্রপচার হওয়ার কথা থাকে তাহলে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ সেই সময় শরীরের রক্তের পরিমাণ এমনিতেই কম থাকে এরপর যদি রক্ত আরো পাতলা হয়ে যায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। তাই এই সময় অস্ত্রগন্ধার ব্যবহার এড়িয়ে চলাই ভালো।
  • যাদের শরীরে পিত্তের প্রভাব থাকে তাদের শরীর স্বভাবত উষ্ণ থাকে। অশ্বগন্ধার উষ্ণ প্রভাবের জন্য ওইসব ব্যক্তিদের এটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার করা ভালো নয়।দীর্ঘদিন ধরে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করলে গ্যাস্ট্রিক আলসার, ডায়রিয়া এবং বমি ভাব দেখা যেতে পারে।
  • যিনি শর্করাও কমানোর ওষুধ নিয়ে থাকেন তিনি অশ্বগন্ধা ব্যবহার করলে রক্তে শর্করার মাত্রা আরো নিচে নেমে যেতে পারে। তাই নিজেদের খাদ্যাভাসে অশ্বগন্ধা যোগ করতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • অশ্বগন্ধায় সামান্য ঘুমের ওষুধের কার্যকারিতা থাকে বলে ঘুম ঘুম ভাব আসতে পারে। তাই কোন ঘুমের ওষুধের সঙ্গে এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে নাহলে আরো অতিরিক্ত ঘুম হবে। 

মন্তব্য

এতক্ষণ আমরা অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি সম্পর্কে অনেক তথ্য জানলাম। আশা করি এইসব অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও ব্যবহারবিধি তথ্য জেনে উপকৃত হবেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html

comment url