চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা
চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা-বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় পানীয় গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কফি। অনেকের ব্লাক কফি পছন্দ, অনেকের মিল্ক কফি আবার অনেকের ক্যাপাচিনো কফি পছন্দ। অনেকের ধারণা ব্ল্যাক কফি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবে এই ধারণাটি ভুল। চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেল পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
বর্তমানে কফি সপ গুলোতে বিভিন্ন ধরনের কফি পাওয়া যায়। এছাড়া কফি খুব সহজে বাসায় বানিয়েও খাওয়া যায়। চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। চিনি ছাড়া কফি খেলে বেশ কিছু উপকারিতা পাওয়া যায়। যারা কফি খেতে পছন্দ করেন তারা দিনে দুইবার দিনে বার যেকোনো সময় নির্দ্বিধায় চিনি ছাড়া কফি খেতে পারেন। এক কাপ চিনি ছাড়া কফিতে ২০% ভিটামিন, প্রায় 60% পুষ্টি, 10% খনিজ ও ক্যালরি পাওয়া যায়।
.
ব্ল্যাক কফি খাওয়ার নিয়ম
চিনি ছাড়া ব্লাক কফি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে আমরা অনেকেই সকালে খালি পেটে চা কফি খেতে পছন্দ করি। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই খালি পেটে আচ্ছা বাবা কফি খাওয়া একেবারে উচিত নয়। কফি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য উপকারি তবে এটা অনেক সময়
অপকারিও। খালি পেটে চা কফি খেলে গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা হতে পারে। আবার যদি বেশ কয়েক মাস ধরে সকালে খালি পেটে কফি খাওয়ার অভ্যাস করেন তাহলে ভিটামিন বি১২, ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আর এইসব কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা তৈরি হতে পারে। দিনে দুই থেকে তিন
কাপ এর বেশি কফি পান করা উচিত নয়। তাহলে এখন রাখতে পারে সঠিক সময় কখন? কফি পান করার সঠিক সময় হচ্ছে সকালে খাবার বা রাতের খাবারের ৩০ মিনিট বা ১ ঘন্টা পর। তাই কফি খালি পেটে না খেয়ে খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পর কফি খেতে হবে।
আরো পড়ুনঃ বর্ষাকালের উপকারিতা ও অপকারিতা
চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা
চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। কফির মধ্যে বেশকিছু উপাদান রয়েছে। কফির বায়ো-অ্যাক্টিভ উপাদান গুলোর মধ্যে রয়েছে ক্যাফেইন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, ট্রাইগোনেলিন। এইসব বায়ো-অ্যাক্টিভ উপাদান গুলো ওজন কমাতে সাহায্য করে। ব্ল্যাক কফিতে থাকা ক্যাফিন খুব দ্রুত বিপাকের ক্রিয়া-কলাপ বাড়ায় শরীরে শক্তি জগতে সাহায্য করে। চলুন চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানা যাক -
স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধিতে
চিনি ছাড়া ব্লাক কফি খাওয়ার উপকারিতা আমাদের শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য অনেক। গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ব্লাক কফি খেলে মানবদেহে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন সকাল বেলা চিনি ছাড়া কফি খেলে বেশ কিছু সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় (যেমন : ডিমেনশিয়া, অ্যালঝাইমার্স,পার্কিনসেন) ইত্যাদি। ব্ল্যাক কফি মস্তিষ্ককে ও নার্ভকে সচল রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে নিয়মিত তিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
ওজন কমাতে
নিয়মিত চিনি ছাড়া ব্লাক কফি খেলে ওজন সাহায্য করে। নিয়মিত চিনি ছাড়া কফি খেলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি দূর করতে সাহায্য করে যার। ফলে শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমতে সহায়তা হয়। চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি হচ্ছে ক্যালরি মুক্ত। নিয়মিত চিনি ছাড়া ব্লাক কফি খেলে ব্লাক কফিতে থাকা
উপাদান গুলো শরীরের মেটাবলিজমকে উদ্যাপিত করতে পারে। যার ফলে শরীরে শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ব্ল্যাক কফিতে থাকা ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, গ্লুকোজের উৎপাদন কমিয়ে অতিরিক্ত ফ্যাট প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি খেলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস
কফি মধ্যে থাকা উপাদান গুলো ক্যান্সার বৃদ্ধির কোষগুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। যারা নিয়মিত চিনি ছাড়া কফি খায় তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত চিনি ছাড়া কফি খায় তাদের মধ্যে ছেলেদের ২০% এবং মেয়েদের ২৫% ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়। নিয়মিত কফি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো তবে অবশ্যই চিনি ছাড়া খেতে হবে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে
চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি ব্লাড সুগার কমাতে বিশেষভাবে কার্যকরী। নিয়মিত চিনে ছাড়া কফি খেলে ডায়াবেটিস খাওয়ার ঝুঁকি ৭% পর্যন্ত কমে যায়। এছাড়া যাদের ব্লাড সুগার রয়েছে তারা যদি নিয়মিত চিনি ছাড়া কফি খায় তাহলে ব্লাড সুগারের মাত্রা কমতে এবং মেটাবলিজম বৃদ্ধি পেতে সাহায্য হয়। ক্যাফিন ইনসুলিন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে।
হার্ট সুস্থ রাখতে
চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। নিয়মিত চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি খেলে দেহের ইনফ্লামেশন কমতে সাহায্য হয় এবং হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। আপনারা সবাই ব্লাক কফি হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
ইউনারি সিস্টেম পরিষ্কার রাখতে
কফি মধ্যে এমন বেশ কিছু উপাদান রয়েছে যার কারনে কফি খেলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। যার ফলে চিনি ছাড়া কফি খেলে শরীরের বিষাক্ত ক্ষতিকর পদার্থ, ব্যাকটেরিয়া প্রসাবের সাথে আমাদের শরীর থেকে বাইরে বের হয়ে যায়। তাই নিয়মিত চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি খেলে পেট পরিষ্কার থাকে।
শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করতে
আমরা যখন বিভিন্ন কাজে অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে হাপিয়ে পরি শারীরিক ও মানসিক ভাবে ক্লান্তি অনুভব করি ঠিক সে মুহূর্তেই আমরা অনেকেই শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করার জন্য কফি খাওয়ার শরণাপন্ন হয়ে থাকি। কফিতে থাকা ক্যাফিন আমাদের নার্ভ সিস্টেমকে প্রভাবিত করে।
স্নায়ুতন্ত্রের একটি বড় উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। এটি রক্তে অ্যাডোনালিনের এর মাত্রা কে প্রভাবিত করে যার ফলে মুহূর্তের মধ্যে আমরা ফ্রেশ অনুভব করি। তাই কফি শারীরিক মানসিক অবসাদ দূর করতেও বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে।
লিভার ফাংশন উন্নত করতে
নিয়মিত এবং পরিমিত চিনি ছাড়া কফি খেলে লিভারে ক্ষতিকর এনজাইম উৎপাদন হ্রাস হয়। যার কারনে ফ্যাটি লিভার, লিভার ক্যান্সার, সিরোসিসের ঝুঁকি কমে যায়। যাদের ফ্যাটি লিভারের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য দুধ কফি, দুধ চা খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো ফ্যাট লিভার রোগীদের জন্য
ভীষণ ক্ষতিকর। তবে চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি তাদের জন্য ভালো। যাদের ফ্যাটি লিভারের সমস্যা রয়েছে তারা যদি নিয়মিত প্রতিদিন ৪ কাপ করে চিনি ছাড়া কফি খেতে পারে তাহলে তাদের জন্য ভালো। সাথে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে যায়।
আরো পড়ুনঃ চিনি খাওয়ার অপকারিতা কি
ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে
চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। নিয়মিত চিনি ছাড়া ব্লাক কফি খাওয়ার ফলে মহিলাদের ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এর জন্য প্রতিদিন দুই থেকে তিন কাপ ব্ল্যাক কফি খাওয়া তবে জন্য উপকারি।
মন্তব্য
চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি খাওয়াও আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। নিয়মিত চিনে ছাড়া কফি খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ জীবাণু থেকেও আমরা মুক্তি পেতে পারি। আজকের আর্টিকেলটিতে চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি ভালো লাগবে। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html
comment url