লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা

লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা-শরীরের অতিরিক্ত ওজন নিয়ে চিন্তিত তাহলে একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপায় ফলো করতে পারেন, শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য খাদ্য তালিকা সাথে নিয়মিত লেবু
পানি খেতে পারেন। লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। লেবুতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টিগণ আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। লেবু খাওয়ার উপকারিতা, অতিরিক্ত লেবু পানি পান করার সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত ওজন কমাতে লেবু পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া লেবুতে রয়েছে সাইট্রিক এসিড। লেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড কিডনিতে পাথর জমা প্রতিরোধ করে।
.

লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা

লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক -

ওজন কমাতে

লেবু পানি ওজন কমাতে অত্যন্ত কার্যকারি ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে লেবু পানি খেলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমে যায়। লেবু মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভিটামিন সি ও অন্যান্য
বিভিন্ন পুষ্টিগুণ , যা শরীরের অতিরিক্ত ওজন দূর করতে সাহায্য করে। তাই যারা অতিরিক্ত ওজনে নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন তারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে নিয়মিত লেবু পানি খেতে পারেন। আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় লেবু পানি যোগ করলে অতিরিক্ত ওজন থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে

লেবুর সাধারণত সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এবং লেবুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও বেশ পরিমাণে পাওয়া যায়। রোগ প্রতিরোধের জন্য, বিভিন্ন রোগের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জন্য লেবু পানি বালিবু রস ভীষণ কার্যকরী। প্রতিদিন নিয়মিত এক গ্লাস লেবু পানি খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

শরীরকে হাইড্রেট রাখতে

লেবু পানি ডিটক্সিফাই করে অর্থাৎ শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত লেবু পানি খেলে শরীর হাইড্রেট থাকে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে

নিয়মিত লেবু পানি খেলে শরীরে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত লেবু পানি খেতে পারেন। এতে হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। লেবুত পানিতে থাকা উপাদান গুলো হজমে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে

লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি আমাদের ত্বকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে, ত্বকের ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে।নিয়মিত লেবুর পানি খেলে ত্বকের মধ্যে থাকা কালচে দাগ কমায়, ত্বকের বলিলেখা কমায়। ভিটামিন সি ত্বককে সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে কার্যকারী। লিলির রস ত্বকে

বিভিন্নভাবে ভাবে ব্যবহার করা যায়। লেবুর রস দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে সেটাই ত্বকে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। স্ক্রাব তৈরির জন্য সামান্য লেবু রসের সঙ্গে অল্প পরিমাণ অলিভ অয়েল লাগবে। এরপর এগুলো ভালোভাবে মিশিয়ে নিলেই স্ক্রাব তৈরি হয়ে যাবে। এবং এটি আপনি আপনার ত্বকে ব্যবহার
করতে পারবেন। ত্বকের যেসব জায়গায় ট্যান পরে বিশেষ করে গলার ভাঁজ, কনুই, এছাড়া শরীরের যেসব জায়গায় ময়লা জমেছে মনে হয় সেসব জায়গায় পাতি লেবু কেটে ঘষে নিলে সহজে পরিষ্কার হয়ে যায়। ত্বকের আদ্রতা ফিরে আনতে লেবু অত্যন্ত উপকারী। তাই ত্বকের যত্নে লেবু অত্যন্ত কার্যকারী। ভিটামিন সি ত্বকের সুরক্ষার অত্যন্ত কার্যকারী।

সর্দি কাশি ঠান্ডা নিরাময়

সর্দি কাশি ঠান্ডা নিরাময়ের জন্য কুসুম গরম পানির সাথে লেবু এবং একটু লবণ মিশিয়ে দিনে কয়েকবার ছেলে সর্দি কাশি ঠান্ডা অনেকটা কমে যায়। লেবু পানি সর্দি কাশি ঠান্ডা নিরাময়েও অত্যন্ত কার্যকারী।

কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে

লেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড পাথর জমা প্রতিরোধ করে। নিয়মিত লেবু পানি খেলে কিডনি পাথর হওয়ার থেকে অনেকটা কমে যায়। তাই কিডনিতে পাথরে ক্ষতি এড়াতে নিয়মিত খাওয়া লেবু পানি খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর করতে

আমাদের শরীর অনেক সময় কাজ করার পর অনেক ক্লান্ত হয়ে যায়। শরীরে শান্তি ভাব দূর করার জন্য এক গ্লাস লেবু পানি যথেষ্ট। লেবু পানিতে থাকা উপাদান গুলো শরীরে ক্লান্তি ভাব দূর করে শরীরকে একটা ফ্রেশ অনুভূতি দেয়। লেবু পানি পান করলে শরীর ও মন সতেজ থাকে।

কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে

প্রতিদিন নিয়মিত সকালবেলায় লেবু পানি খাওয়া যায় তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে লেবু পানি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে সকাল বেলায় নিয়মিত লেবু পানি খেতে পারেন। লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। লেবুর টক শার্ট শরীরের অগ্নিকে উদ্দীপিত করে, খাবার হজমের সহায়তা করে এবং টক্সিন জমা হওয়ার রোধ করতে সাহায্য করে।

মুখের গন্ধ হ্রাস করতে

আমাদের মুখে বিভিন্ন সময় গন্ধ হয়ে থাকে। যেমন: কাঁচা পিয়াজ, রসুন, মাছ খেলে, দাঁত ব্রাশ না করলে মুখ গন্ধ হতে পারে। এমন অবস্থায় আপনি যদি মুখে লেবুর ব্যবহার করতে পারেন। আবার খাবারের পরে এবং সকালে এক গ্লাস লেবু পানি পান করলে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ এড়ানো যাবে। এরকম করলে মুগ্ধ শুষ্ক হবে না ও ব্যাকটেরিয়া ধরে তো নিঃশ্বাসের দূর্গন্ধের আশঙ্কা কম হবে। তাই মুখের গন্ধ ক্রাশ করতে লেবু পানি গুরুত্ব বহন করে।

শরীরের কাটা ছেঁড়া ক্ষতস্থান শুকাতে

লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। লেবু পানি খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। শরীরের কোন জায়গা কেটে গেলে সে জায়গাটা অতি দ্রুত শুকাতে চাইলে লেবু পানি বা লেবুর রস বেশি পরিমাণে খেতে হবে। অনেক সময় এক্সিডেন্ট সার্জারি বিভিন্নভাবে তৈলের বিভিন্ন জায়গা কেটে যেতে
পারে সেসব ক্ষতস্থান শুকাতে লেবু অত্যন্ত কার্যকরী। লেবু ক্ষতস্থানের এর ঘা শুকাতে ভীষণ কাজ করে। লেবু সাইজে ছোট হলেও এর কার্যকারিতা বিশাল। বিশেষ করে যারা অপারেশনের রোগী থাকে তাদের জন্য লেবু অত্যন্ত উপকারী। এজন্য চিকিৎসকরা অপারেশন রোগীদেরকে ক্ষতস্থান শুকানোর জন্য বেশি বেশি লেবু পানি বা লেবুর রস খেতে বলেন। 

বিপাকে সাহায্য করতে

বিপাকের জন্য ঠান্ডা পানিও অত্যন্ত উপকারি। লেবুর খোসা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে যা বিপাকে সাহায্য করে থাকে। এইজন্য ঠান্ডা লেবু পানির সাথে কিছুটা খোঁচা কুচি করে মিশিয়ে খেলে বিপাকেও সাহায্য হয়।

পুষ্টির ঘাটতি দূর করতে

লেবুর পানিতে রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাসিয়াম ইত্যাদি আরো পুষ্টিগুণ। নিয়মিত লেবু পানি খেলে এই সব পুষ্টিগণ শরীরের ভেতরের পুষ্টিগুণের ঘাটতি দূর করতে সাহায্য করে।

লিভারের কার্যক্ষমতা সচল রাখতে

লেবু পানি লিভারের কার্যক্ষমতা সচল রাখতে অবদান রাখে। লিভার মানবদেহে ফিল্টার হিসেবে কাজ করে। লেবুর মধ্যে রয়েছে সাইট্রাস ফ্লাভোনইডস। যা লিভার থেকে বর্জ্য অপসারণ করতে ও লিভারের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত লেবু পানি খেলে লিভারের কার্যক্ষমতা সচল থাকে।

শরীরে ph এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে

নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠে লেবু পানি খেলে শরীরের পিএইচ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে। এবং শরীরে শক্তি সরবরাহ করতে সাহায্য করে।

শরীরকে সতেজ রাখতে

আমরা অনেক সময় রৌদ্রে বা কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পড়ি। গ্রীষ্মকালে তীব্র রোদে আমাদের শরীর ও মন দুটোই নিস্তেজ হয়ে পড়ে এমন সময় শরীরকে সতেজ করার জন্য যদি এক গ্লাস লেবু পানি খাওয়া যায় তাহলে শরীর মুহূর্তের মধ্যে সতেজ হয়ে যায়। লেবুর মধ্যে এমন এমন উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।

অতিরিক্ত লেবু পানি পান করার সতর্কতা

আমরা এতক্ষণ জানলাম লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। অতিরিক্ত কোনো কিছু খাওয়া ভালো না। অতিরিক্ত লেবু পানি খেলে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এর জন্য অতিরিক্ত লেবু পানি পানের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে -
  • লেবুর মধ্যে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড। সাইট্রিক অ্যাসিড গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বৃদ্ধি করে। তাই তাদের গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা রয়েছে, তাদের অতিরিক্ত লেবু পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। না হলে তাদের কাছ থেকে সমস্যা আরো বেড়ে যাবে।
  • যাদের এসিডিটি সমস্যা রয়েছে তাদেরকে দিনে দুইবারের বেশি লেবু পানি খাওয়া যাবেনা। লেবু পানি একটানা অনেকগুলো না খেয়ে একটু একটু করে খেতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে জানো অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া না হয়। তাই যাদের এসিডিটির সমস্যা রয়েছে তাদেরকে প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  • লেবু পানিতে ভিটামিন সি এর পরিমাণ অনেক বেশি থাকে এনামেল এর ক্ষতি করতে পারে। তাই লেবু পানি পান করার পর ভালো কুলি করে মুখ পরিষ্কার করতে হবে।

মন্তব্য

আমরা আজকে আর্টিকেলটিতে লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা অনেক। নিউ পানি খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। আশাকরি আরটিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। এতক্ষন সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html

comment url