চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয় গুলোর মধ্যে নিঃসন্দেহে চা একটি হচ্ছে চা। চা তৈরি হয় ক্যামেলিয়া সিরোসিস নামক চিরহরিৎ গুল্ম থেকে। নিয়মিত চিনি ছাড়া চা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। চিনি ছাড়া চা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আজকের আর্টিকেলটিতে চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা, অতিরিক্ত চা খাওয়ার অপকারিতা
, কফি নাকি চা জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
চিনি ছাড়া চায়ের উপকারিতা অনেক। চা মানসিক ক্লান্তি দূর করা থেকে শুরু করে শরীরে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চা মন ভালো রাখতে, হাড় সতেজ রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষভাবে কার্যকরী। তবে অবশ্যই এর জন্য চিনি ছাড়া চা খেতে হবে। চলুন চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক। চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা জানতে ওয়েবসাইটে সাথে থাকুন।
.
কফি নাকি চা
চায়ের মধ্যে ক্যাফেইন এর জন্যই মূলত মানুষ চায়ের মত পানীয় দিকে বেশি আকৃষ্ট থাকে। কফি বেশি জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু হলেও পানীয় হিসেবে চা অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে এক কাপ চায়ে এর পরিমাণ ৪০ মিলিগ্রাম এবং কফিতে ক্যাফেইনের পরিমাণ ৮০ থেকে ১১৫ মিলিগ্রাম। হিসাব
করলে যা চায়ের কাফিনের তুলনায় দ্বিগুণ জীবন বেশি। এই হিসাব থেকে বোঝা যায় কফি তুলনায় চা একটু বেশি হলেও উপকারী। কারণ চায়ে ক্যাফেইন কম থাকে। শরীরে যদি ক্যাফাইনের পরিমাণ বেশি হয়ে যায় তাহলে সেটি আমাদের জন্য ক্ষতি করে। চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। এছাড়া
আরো পড়ুনঃ চিনি ছাড়া কফি খাওয়ার উপকারিতা
অর্থনৈতিকভাবেও কফির তুলনায় চা বেশি সাশ্রয়ী। আরো একটি গবেষণায় দেখা যায় একই পরিমাণ চা ও কফি খাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যারা কফি খাওয়া ব্যক্তিদের ঘুমে কিছুটা সমস্যা দেখা যায়। অন্যদিকে চা খাওয়া ব্যক্তিদের ঘুম তুলনামূলক দীর্ঘ ও প্রশান্তিদায়ক হয়।
চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা
চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। চলুন চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কের বিস্তারিত জানার যাক-
হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা ভালো রাখতে
চিনি ছাড়া চা পান করার একটি বিশেষ উপকারিতা হচ্ছে হৃদপিণ্ডকে সুরক্ষা প্রদান করতে সাহায্য করে। চায়ের মধ্যে বেশ কিছু অ্যান্টিজেন রয়েছে। প্রতিদিন নিয়মিত চা খেলে এইসব অ্যান্টিজেন গুলো হৃদপিণ্ডকে সুরক্ষা রাখতে সহয়তা। তবে অবশ্যই চিনি ছাড়া চা খেতে হবে। কারণ শরীরে যদি চিনির
পরিমাণ যদি অতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে সেটি আবার ক্ষতি কারণ হয়ে দাঁড়াবে। যারা দিনে ৬ কাপের বেশি চাপ পান করে সেসব ব্যক্তিদের হৃদ রোগের আশঙ্কা এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কমে যায়। তাই প্রতিদিন নিয়মিত কয়েক কাপ চা খেলে এই প্রতিরোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়া সম্ভব। যারা অতিরিক্ত চাপ
আরো পড়ুনঃ লটকন খাওয়ার উপকারিতা কি
পানে অভ্যস্ত তাদের জন্য অতিরিক্ত চিন্তার কারণ নেই, একটি পজিটিভ দিক রয়েছে। যা একটু বেশি চাপ হয় তাদের জন্য একটি সুখবর হচ্ছে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। নিয়মিত চা পান করলেন হৃদপিন্ডের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ব্ল্যাক টি হার্ট কে ভালো রাখে।
কোলেস্টেরলের সমস্যা দূর করতে
আমাদের শরীরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখা খুব বেশি প্রয়োজন। কারণ শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে হার্ট অ্যাটাক এর সম্ভবনা বেড়ে যায়। যারা নিয়মিত চিনি ছাড়া ব্লাক টি খায় তাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা অনেকটা দূর হয়ে যায়। এবং যারা ওজন বৃদ্ধির সমস্যা নিয়ে চিন্তিত আছে তারা নিয়মিত চিনি ছাড়া লিকার চা খেতে পারেন। এতে অতিরিক্ত ওজন কমতে সাহায্য হবে হবে।
মানসিক চাপ কমাতে
চায়ের মধ্যে এমন কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা মানসিক ও শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। অনেক সময় বিভিন্নভাবে আমরা অতিরিক্ত মানসিক চাপে পড়ে যাই এবং সেখান থেকে আমাদের শরীরের অক্সাইডস নামক এক ধরনের পদার্থ উৎপন্ন হয়। এমন সময়
চা খেলে চেয়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশের মাধ্যমে সে অক্সাইডস নামক পদার্থকে ধ্বংস
করে দেয়। যার কারনে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই মানসিক চাপ কমাতে চায় ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। যা মানুষের মনকে উৎফুল্ল করতে, শরীর সতেজ রাখতে এবং কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে
সাহায্য করে। আবার চা মানুষের স্নায়ুকে শান্ত রাখতে বেশ কার্যকারী। গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত চা পান করে তারা তুলনামূলক শান্ত প্রতিক্রিয়া দেখায়।
ত্বকের জন্য উপকারী
চায়ের মধ্যে থাকা ক্যাফেন চুল এবং ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এর জন্য গ্রিন টি, ব্ল্যাক টি, আর্ল গ্রে খেতে পারেন। তবে অবশ্যই চিনি ছাড়া খেতে হবে চিনি যুক্ত চা খাওয়া যাবে না। তো ভালো রাখার জন্য সকলে এক কাপ চিনি ছাড়া ব্ল্যাকটি খেতে পারেন।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
আমরা এতক্ষন জানলাম চা মানসিক চাপ কমাতে অনেক কার্যকরী। তবে চা শুধু মানসিক চাপ কমাতে নয় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও বেশ কার্যকরী। যেমন আপনার যদি ঠান্ডা সর্দি কাশি হয়
তাহলে আদা চা মসলা চা খেলে অনেকটা উপকার পাওয়া যায়। আবার ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের জন্য চিনি ছাড়া চা অনেক উপকারী। চিনি ছাড়া চা গ্রহণ করলে শরীরের কোষ থেকে ১৫ গুন বেশি ইন্সুরেন্স উৎপন্ন হয়। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ভালো একটি দিক। চায়ে উপস্থিত অন্যান্য পুষ্টি
উপাদানগুলো বিপাকে সাহায্য করে এবং শরীরে ইনসুলিনকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে রক্তে গ্লুকোজের দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ইনসুলিন যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে নির্গত হয় তাহলে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই চিনি ছাড়া চা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
একাগ্রতা বাড়াতে
এমন অনেক সময় হয় যে একটানা অনেকক্ষণ কাজ করতে হয়। একটানা অনেকক্ষণ কাজ করা সম্ভব নয় শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি আসে। এটা স্বাভাবিক। তবে ক্রান্তি দূর করার জন্য এক কাপ চা যথেষ্ট। একটু ব্রেক নিয়ে ব্ল্যাক টি খেতে পারেন এতে শরীর ও মন দ্রুত ভালো হয়ে যাবে এবং ক্লান্তি দূর হবে।
আরো পড়ুনঃ চিনি খাওয়ার অপকারিতা কি
অতিরিক্ত চা খাওয়ার অপকারিতা
চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিত অনেক। তবে অতিরিক্ত যে কোন কিছু আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত চা খাওয়ার অপকারিতাও অনেক। অতিরিক্ত পরিমাণে চা খেলে বেশ কিছু শারীরিক জটিলতার মধ্যকরতে পড়তে হয়। চলুন অতিরিক্ত চা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে জানা যাক -
- চা এর মধ্যে ক্যাফাইন থাকার কারণে ঘুমের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এটি সবার জন্য না যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে তাদের। কারণ অতিরিক্ত চা সেবনের ফলে ঘুমের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
- চায়ে থাকা ক্যাফাইন ব্রণের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে যার ফলে গর্ভপাত করতে পারে। তাই গর্ভবতী মহিলাদের চা পান সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন।
- চায়ের মধ্যে রয়েছে থিওফাইলিন নামক একটি রাসায়নিক উপাদান, যা শরীরে ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে। এবং ডিহাইড্রেশন থেকে হজমের সমস্যা তৈরি হতে পারে এরপর কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগ দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত চা পানের একটি মারাত্মক দিক হচ্ছে অতিরিক্ত চা পানের কারণে পোস্টেট ক্যান্সার হতে পারে।
- অতিরিক্ত চা খাওয়ার ফলে ঘুমের সমস্যা কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে উদ্বেগ ও অস্থিরতা মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এতক্ষণ অতিরিক্ত চা খাওয়ার অপকারিতা গুলো জানলাম। তাই আমাদের অতিরিক্ত চা খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত চা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা বর্জন করতে হবে।
মন্তব্য
আমরা এতক্ষন চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। চিনি ছাড়া চা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। তবে এটা মাথায় রাখতে হবে অতিরিক্ত চা খাওয়া যাবে না। আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসবে। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html
comment url