শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তি কমানোর উপায়

শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তি কমানোর উপায়- সম্পর্ক জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। বর্তমান সময়ে একটি সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে কিছুটা মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি। তাই
শিশুদের মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি কমাতে বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করা প্রয়োজন। শিশুদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তি কমানোর উপায় জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

শিশুরা অনুকরণ করতে পছন্দ করে শিশুরা বড়দেরকে যা করতে দেখে সেটি করার চেষ্টা করে। শিশুরা যখন বড়দের হাতে দেখতে পায় স্মার্টফোন দেখতে পাই তখন তারা সেটি নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এমন অনেক শিশু আছে যে মোবাইল ফোন না পেলে খেতে পর্যন্ত চায় না। সেজন্য শিশুদের সামনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আজকে আর্টিকেলটিতে শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তি কমানোর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।
.

শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তি কমানোর উপায়

শিশুদের সামনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে

শিশুরা যেহেতু বড়দের কে দেখে অনুকরণ করতে পছন্দ করে। তাই শিশুদের সামনে মোবাইল ফোনে গান শোনা ইউটিউবে ভিডিও দেখা চ্যাটিং করা এসব থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ শিশুদের সামনে যখন আপনি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করবেন তখন তারাও সেটি ব্যবহার করতে চাইবে। এবং এভাবেই
 আসক্ত হয়ে যায়। এমনও অনেক সময় হয় যে সব সময় শিশুরা মোবাইল ফোন চালাতে ব্যস্ত থাকে। অনেক শিশু আছে যারা বয়স অনেক কম হলেও মোবাইল ফোনে আসক্তি থাকার কারণে খাওয়ার সময়ও মোবাইল ফোন নিয়ে থাকতে চায়, মোবাইল ফোন ছাড়া খেতে চায় না। এমন সময় বাচ্চাকে নিয়ে
বাচ্চার মায়েরা হতাশাগ্রস্ত হয়। এই হতাশা থেকে মুক্তি পেতে শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তি কমানোর উপায় গুলো আপনি ভালোভাবে আয়ত্ত করুন। আর্টিকেলটিতে মোবাইল ফোন আসক্তি কমানোর উপায় গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে শিশুদের মোবাইল ফোনে আসনটি কমানোর উপায় জানতে আর্টিকেলটি সাথেই থাকুন।

আপনার সন্তানকে সময় দিন

শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তি কমানোর উপায় গুলোর একটি হলো সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া। এমন অনেক বাবা মা আছেন যারা তাদের সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দেন না। যার ফলে তাদের বাচ্চারা বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। অনেক বাবা মা টিভি সিরিয়াল দেখতে, ফেসবুকিং কিংবা

চ্যাটিং করতে, ইউটিউবে ভিডিও দেখতে, গান শুনতে ইত্যাদি এসব বিভিন্ন কাজে বাচ্চাদের সময় না দিয়ে নিজেরা নিজেদের ব্যস্ত রাখেন। যার ফলে শিশুরা একাকীত্ব অনুভব করে। যার ফলে তাদের মোবাইল ফোনে আসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই আপনাদের নিজেদের শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণ

সময় দিন। তার সাথে গল্প করুন, তাকে খাওয়ান, মাঠে নিয়ে খেলতে যান, সপ্তাহে দুই একদিন বাইরে থেকে ঘুরে আসতে পারেন। একজন শিশুর প্রকৃত বন্ধু হচ্ছে তার বাবা-মা। একজন শিশুকে তার বাবা-মা যেমনভাবে পরিচালনা করে সে ঠিক তেমনভাবে বেড়ে ওঠে। তাই একজন বাবা মাকে অবশ্যই যাতে তার সন্তান সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

নির্দিষ্ট সময়ে নো ডিভাইস নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন

নির্দিষ্ট সময় যেন বাচ্চার ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করার ফলে অনেক সময় শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। কিছু নির্দিষ্ট সময় যেমন খাবার সময় ঘুমানোর আগে যাতে মোবাইল ফোন সহ
অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস কোনভাবেই শিশুদেরকে দেওয়া যাবে না। শিশুরা যাতে স্মার্টফোন থেকে বিরক্ত থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শিশুদের ঘুমের সময় নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ তাদের বিছানার পাশে যেন কোন ডিভাইস না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। একজন মানুষকে প্রতিদিন ৮ থেকে ৯ ঘন্টা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমোতে হবে। শিশুদের কে মাঝে মাঝে ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে।

শিশুকে শখের কাজ করতে শেখান

শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তি কমানোর উপায় গুলোর একটি হলো শিশু পছন্দ করে এমন কিছু তাকে করতে দেওয়া। শিশু পছন্দ করে এমন কিছু শেখানো ব্যবস্থা করতে পারেন যেমন সাঁতার, জিমন্যাস্টিকস, নাচ, গান,আর্ট ইত্যাদি। তারা নিজেরা করতে চায় এমন কিছু শেখাতে পারে। তাদেরকে সৃজনশীল কর্মকাণ্ড ব্যস্ত রাখুন। যার ফলে অবসর সময় গুলোতে নিজেদের ব্যস্ত রাখতে এবং ও উৎপাদনশীল রাখতে সাহায্য করবে।

পারিবারিক আড্ডার ব্যবস্থা করুন

প্রতিদিন সমস্ত দিনে একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তত একবার আপনার পুরো পরিবারের সব সদস্যরা মিলে সময় কাটানোর ব্যবস্থা করুন। এই সময় বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম করতে পারেন যেমন: গল্প করা, কোন কিছু খেলা, গান, আবৃতি, কোরআন তেলোয়াত ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা করতে পারেন যাতে পরবর্তীতে শিশুরা আপনাদের দেখে শেখে। পরিবারের সবার সঙ্গে আনন্দময় স্মৃতি তৈরি করতে পারেন। এটি শিশুকে একজন হাসিখুশি আর ইতিবাচক মানুষ হিসেবে তৈরি করতে সাহায্য করবে।

শিশুদেরকে বাইরে খেলার ব্যবস্থা করা

শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি খেলাধুলা করার জরুরী। একটি শিশু যখন মাঠে গিয়ে আরো অন্যান্য শিশুদের সাথে করে সেখান থেকে তো আরো
অনেক কিছু শেখে। তারা বন্ধুত্ব পূর্ণ আচরণ করতে শেখায়, একে অপরকে সহযোগিতা করতে শেখে, প্রতিযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড শিখে ইত্যাদি অনেক কিছু শেখে। তাই বাচ্চাদেরকে বাইরে অন্য বাচ্চাদের সাথে খেলার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এতে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটবে।

শিশুদের বই পড়তে উৎসাহিত করে

শিশুদের বই পড়া উপভোগ করতে উৎসাহিত করতে হবে। এজন্য পুরো পরিবারের সদস্য প্রতিদিন কিছুটা সময় অন্তত আধা ঘন্টা করে বাচ্চা সামনে বই পড় আমাদের সময় বের করুন এবং বই পড়ুন। বই পড়া শেষ হলে শিশুরা তাদের বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে যে বইগুলো পড়েছে তা নিয়ে আলোচনা করতে পারে। শিশুদেরকে এমন ভাবে বই পড়তে অভ্যস্ত করলে তারা উৎসাহিত হবে। তাদের বই পড়ার আগ্রহ বাড়বে।

সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দেওয়া

শিশুকে বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করুন। যেমন: ছবি আঁকা গান করা, নাচ করা, গাছ লাগানো, পাখিদের খাবার দেওয়া, কাগজ কেটে বিভিন্ন জিনিস বানানো, কবুতর পোষা, কোন কিছু হারিয়ে গেলে সেটি খুঁজে বের করা ইত্যাদি কাজে শিশুকে উৎসাহিত করতে হবে। তাকে নেগেটিভ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সব সময় পজিটিভ ভাবে তাকে বেড়ে উঠতে সাহায্য করতে হবে।

ঘরের কাজে দায়িত্ব দিন

শিশুদেরকে সংসারের ছোট ছোট কাজে সহযোগিতা করতে উৎসাহিত করুন। তাদের মাঝে তারা করতে পারবে এমন কাজগুলো ভাগ করে দিন। যেমন সংসারের ছোটখাটো জিনিসগুলো এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে উৎসাহিত করুন। এই শিশুদেরকে বকা দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। কোন কাজে ভুল করলে সেটি বুঝিয়ে বলুন। শিশুদেরকে অতিরিক্ত বকাঝকা করলে সেটি তাদের মানসিক উপর প্রভাব ফেলবে।

শিশুদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে

অনেক সময় দেখা যায় অনেক বাবা মা নিজেদের বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করার জন্য শিশু তো ব্যস্ত রাখতে বা শান্ত রাখতে শিশুর হাতে স্মার্টফোন তুলে দেন। বর্তমান যুগে প্রায় সব গার্ডিয়েন বাচ্চা না চাইলে বা বেশি বিরক্ত করলে বাচ্চাদের মোবাইল ফোনে কার্টুন বিভিন্ন বিনোদনমূলক ভিডিও গিয়ে
তাকে খাওয়াতে বা শান্তর একটু চেষ্টা করেন। যা কিছু সময়ের জন্য শিশুদের শান্ত রাখলেও তার মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। বাচ্চাদের হাতে কখনই স্মার্টফোন ফোন তুলে দেওয়া উচিত নয়। মোবাইল ফোন দেওয়ার পরিবর্তে বা মোবাইল ফোন থেকে আসক্তি কমাতে শিশুকে গল্প শোনাতে
পারেন, শিশুকে বাসার বাইরে নিয়ে নিয়ে যেয়ে হাটাহাটি করে খাওয়াতে পারেন, শিশুর সাথে নিজেও খেতে পারেন যাতে শিশু সেটা দেখে খায় এভাবে বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন। এসবের পরেও যখন বাচ্চারা ফোন নিতে চায় তখন তাকে নতুন নতুন খেলনা দিয়ে বা তার সাথে খেলে টাকে মোবাইল ফোনে কথা ভুলিয়ে রাখুন। বাচ্চারা অত্যাধিক মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে মস্তিষ্কের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি হতে পারে।

মন্তব্য

শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করা কোনভাবে ঠিক নয় আজকের আর্টিকেলটিতে শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তি কমানোর উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো আশা করি শিশুদের মোবাইল ফোনে আসক্তি কমানোর উপায় গুলো জেনে আপনি উপকৃত হবেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html

comment url