কেশরাজ গাছ এর উপকারিতা

কেশরাজ গাছ এর উপকারিতা - কেশরাজ একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। কেশরাজ গাছের উচ্চতা ৫০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। একটি ঔষধি গাছ। কেশরাজর মূল, পাতা, কান্ড, ফুল, ফল অর্থাৎ
গাছটি পুরোটাই অংশ ব্যবহার করা যায়। কেশরাজ গাছ এর উপকারিতা, চুলের যত্নে কেশরাজের উপকারিতা, কেশরাজের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

কেশরাজ গাছ এর উপকারিতা অনেক। মাথার চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি গাছ। কেশরাজে রয়েছে বহু ঔষধের গুনাগুন। কেশরাজ বহু কাজে ব্যবহার করা হয়। মাথা ঠান্ডা রাখতে, চুল লম্বা করতে, চুল মজবুত করতে কেশরাজের ভূমিকা অত্যন্ত বেশি।কেশরাজ গাছটি প্রায় সব জায়গায় খুব সহজে জন্মাতে পারে। এটি বাড়ির আশেপাশে, পুকুরের আশেপাশে, বন জঙ্গলে পাওয়া যায়।
.

কেশরাজ গাছ এর উপকারিতা

কেশরাজ গাছ এর বহু উপকারিতা রয়েছে। এটি অত্যন্ত উপকারী একটি গাছ। গাছটির সম্পূর্ণ অংশই গুনাগুন সম্পূর্ণ। কেশরাজ চুলের যত্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়া কেশরাজের মধ্যে রয়েছে বহু ঔষধি গুনাগুন। চলুন কেশরাজ গাছ এর উপকারিতা গুলো জানা যাক -

মাথা ঠান্ডা রাখতে
কেশরাজ এ থাকা উপাদান গুলো মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এবার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে এরশাদ কিভাবে মাথায় ব্যবহার করতে হবে? কেশরাজ মাথায় ব্যবহার করার জন্য প্রথমে গাছটি উঠিয়ে ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পরিষ্কার করা হয়ে গেলে এই গাছের পাতা, ফুল ও ফল
একসাথে বেটে নিতে পারেন অথবা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে পারেন। এরপর ২৫০ গ্রাম নারিকেল তেলের সঙ্গে এক কাপ পরিমাণ বেটে রাখা কেশরাজের রসের সাথে একটি জবা ফুল, একটি আমলকি, চার পাঁচটি কারি পাতা, এক চা চামচ মেথি ইত্যাদি দিয়ে মিশ্রনটি চুলায় ভালোমতো ফুটাতে হবে।
মিশ্রণটি ভালোমতো ফুটানো হয়ে ঠান্ডা করতে হবে। এরপর একটা ছাকনি দিয়ে ভালোমতো ছেকে একটি বোতলের সংরক্ষণ করুন। তৈরিকৃত মিশ্রণটি মাথায় মালিশ করলে মাথা ঠান্ডা হবে। সেই সাথে চুল পড়া বন্ধ, চুল কালো ও লম্বা হবে।

মাথাব্যথা দূর করতে
ভেষজ গুণসম্পন্ন ভৃঙ্গরাজ বা কেশরাজ তেল মাথায় ব্যবহার করলে মানে মালিশ করলে মাথাব্যথা কিছুক্ষণের মধ্যেই দূর হয়ে যায়। কেশরাজ তেল ছাড়াও কেশরাজ পাতার রস দুই ফোটা কপালে মালিশ করলে বা নাকের ভেতরে দিলে মাথাব্যথার নিরাময় হয়ে থাকে। মাথাব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।

সারাদিন অতিরিক্ত কাজকর্ম করলে, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে, মাইগ্রেন, অতিরিক্ত ব্যাথা নাশক ওষুধ সেবন করলে ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। মাথাব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক আরাম পেতে ভৃঙ্গরাজ তেল বাকি কেশরাজ তেল বা কেশরাজ পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন। আমরা প্রায় অনেকেই জানি ভৃঙ্গরাজ তেল মাথা ব্যথার জন্য অত্যন্ত উপকারী।

স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায়
কেশরাজ গাছে থাকা উপাদানগুলো কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র কে উদ্দীপ্ত করে। গবেষণায় দেখা গেছে স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় কেশরাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই স্নায়ুতন্ত্র সুরক্ষার জন্য কেশরাজ ব্যবহার করতে পারেন।

শরীরে ক্ষতস্থান শুকাতে
শরীরের কোথাও কেটে গেলে বা ক্ষতস্থানে সৃষ্টি হলে সেই কাটা জায়গা বা ক্ষতস্থান শুকাতে এসরাজ কেশরাজ ব্যবহার করলে নিরাময় পাওয়া যায়। এইজন্য কাটা স্থানে বা ক্ষতস্থানে কেশরাজের পাতা বেটে পেস্ট বানিয়ে কাটা স্থানে বা ক্ষতস্থানে কেশরাজের প্রলেপ লাগালে তাৎক্ষণিক রক্ত পরা বন্ধ হয়ে যায়

এবং ক্ষতস্থান বা কাটা স্থান ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। কাটা স্থান বা ক্ষতস্থান শুকাতেও কেশরাজ অত্যন্ত উপকারি। তাই কাটার স্থান বা ক্ষতস্থানের তাৎক্ষণিক রক্ত পড়া বন্ধ করতে কেশরাজ ব্যবহার করতে পারেন।

কৃমি ও কাশি কমাতে
কেশরাজ কৃমি ও কাশি কমাতে সাহায্য করে থাকে। এরজন্য কেশরাজ পাতা জাল দিয়ে নির্যাস তৈরি করতে হবে। এবং কেশরাজের কয়েকটি পাতার সাথে মায়োকার্ডিয়াল, হাইপোটেনসি ডেপ্রেস্যান্ট বেটে খেলে কৃমি ও কাশি কামাতে এটি বেশ কার্যকরী।

লিভারের টনিক হিসেবে
কেশরাজ লিভারের যেকোনো সমস্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি লিভারের টনিক হিসেবে কাজ করে। লিভারে যাদের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত কেশরাজ এর ব্যবহার করতে পারেন।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
কেশরাজ ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ সাহায্য করে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত দুই চা চামচ কেশরাজ পাতার রস খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। কেশরাজ পাতার রসে থাকা উপাদানগুলো ব্লাড সুগারের মাত্রা কমায় এবং গ্লাইকোসাইলেটেড ও হিমোগ্লোবিন এই পরিমাণ কমায়। এছাড়া গ্লুকোজ-৬

ফসফেট, ফুক্টোজ ১,৬ ডাই-ফসফেট এর কার্যকারিতা কমায় এবং লিভারের হেক্রোকিনেজ এর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত কেশরাজ পাতার রস খেতে পারে এতে উপকৃত হবেন।

লিভারের সুরক্ষাতে
মানবদেহে লিভার একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি ছাকনি হিসেবে কাজ করে। মানবদেহে যা কিছু প্রবেশ করে তা প্রসেসের কাজ করে লিভার। কেশরাজ পাতা সেবন করলে লিভারের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। লিভারের যে কোন অসুখ অন্তত মারাত্মক। এটি মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে। তাই
লিভারের সুরক্ষা অত্যন্ত প্রয়োজন। কেশরাজ পাতায় থাকা অ্যামিডোপাইরিন, এন-ডিমিথাইল গ্লুকোজ ৬ ফসফেট উপাদান যা লিভারের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে। কেশরাজ পাতা লিভারের এ্যাবসেস, লিভার সিরোসিস, লিভার প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে। যাদের লিভারের সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন কেশরাস পাতার রস একটা চামচ আধা কাপ পানির সাথে মিশিয়ে সেবন করলে লিভার সমস্যা গুলো নিরাময় হবে এবং শরীর ডিক্সিফাই হবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
নিয়মিত কেশরাজ পাতার রস সেবন করলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কেশর আজ পাতা প্রতিদিন খাওয়ার জন্য আপনি এটি শাক হিসেবে রান্না করে খেতে পারেন। এদের শরীরের অন্যান্য পুষ্টি চাহিদা গুলো পূরণ হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত উপকারিতা অনেক। তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নিয়মিত কেশরাজ পাতা সেবন করতে পারেন।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে
কেশরাজ অত্যন্ত উপকারী একটি গাছ। কেশরাজ এ থাকা উপাদান গুলো ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা থাকে।

নিরাপদ কীটনাশক হিসেবে
গবেষণায় প্রমাণিত কেশারাজ মশা অপসারণ করতে পারে। নিরাপদ কীটনাশক হিসেবে কেশরাজ ব্যবহার করার জন্য দুই চা চামচ কেশরাত পাতার রস 500ml পানির সাথে মিশিয়ে ঘরের বাইরে স্প্রে করলে মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

কেশরাজের কয়েকটি নাম

কেশরাজের বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে এগুলো হলো ভৃঙ্গরাজ, কালোকেশী, কেশড়ে, কেশুতি, কোশুতি, মইরচর, কেশঠি, কেশরডা, কেউতি, কোশুতি, খেতুয়া কালসাতার, কালোকেশিরিয়া, কানুনি, ঝার, গালাগারা, সামবাল, ভৃঙ্গরা ইত্যাদি। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত কেশরাজ।

চুলের যত্নে কেশরাজ

চুলের যত্নে কেশরাজ এতটা উপকারী যে তা হয়তো আপনি না জানলে বিশ্বাস করবেন না। কেশরাজ গাছ এর উপকারিতা অনেক। চুল কালো করতে, চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে, চুল মজবুত করতে কেশরাজ অত্যন্ত উপকারী। চলুন চুলের যত্নে কেশরাজ এর উপকারিতা গুলো জানা যাক -

চুলের যত্নে কেশরাজের উপকারিতা

চুল ঘন কালো করতে
চুলের রং ঘন কালো করতে অন্যতম একটি প্রাকৃতিক উপায় হচ্ছে কেশরাজ ব্যবহার করা। আপনি চাইলে চুল ঘন কালো করার জন্য কেশরাজ তেল অথবা কেশরাজ পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন। কিভাবে ব্যবহার করবেন তাই তো? চলুম জানা যাক প্রথমে কেশরাজ কাণ্ড, পাতা, ফুল গুলো পানি দিয়ে

ভালোভাবে পরিষ্কার করবেন। তারপর সেগুলো বেটে নিবেন অথবা বেন্ডারে বেল্ড করে নিবেন। তারপর এই মিশ্রণ গুলো গোসল করার কয়েক ঘন্টা পূর্বে ভালোভাবে সমস্ত চুলে মাখিয়ে নিবেন। এরপর শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর গোসল করার সময় শ্যাম্পু দিয়ে চুল গুলো ভালো মতো পরিষ্কার করে নিন। এইভাবে সপ্তাহে দুইবার চুলে কেশরাজ ব্যবহার করলে বেশ উপকার পাবেন।

চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে
কেশরাজ গাছ এর উপকারিতা অনেক। প্রাকৃতিক উপায়ে চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে কেশরাজ বিশেষভাবে সাহায্য করে। নিয়মিত কেশরাজ তেল ব্যবহার করলে চুল পড়া রোধ হয়। যাদের অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত কেশরাজ তেল ব্যবহার করতে পারেন।

খুশকি দূর করতে
খুশকি দূর করতে কেশরাজ বেশ উপকারী। কেশরাজে থাকা উপাদান গুলো মাথার খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। কেশরাজে রয়েছে খুশকি দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় ইনফ্লামেটরি ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান সমূহ। যা খুশকি সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে থাকে। তাই যারা প্রাকৃতিক উপায়ে খুশকি দূর করতে চান তারা কেশরাজ ব্যবহার করতে পারেন

কেশরাজ তেল ব্যবহার করার নিয়ম

কেশরাজ বা ভৃঙ্গরাজ তেল ব্যবহার করা জন্য রাতের সময়টা বেশ উত্তম। অন্যান্য তেল যেভাবে মাথারআচুলে ব্যবহার করেন একইভাবে কেশরাজ তেলটি ব্যবহার করা যাবে। রাতের বেলায় শুতে যাওয়ার আগে ভিঙ্গরাজ বা কেশরাজ তেল দিয়ে সমস্তমাথায় ভালোভাবে মালিশ করতে হবে। চুলের
গোড়ায় ও স্ক্যাপ্লে ভালোভাবে তেল দিয়ে মালিশ করতে হবে। এবং চুলের গোড়ায় ভালোভাবে তেল লাগাতে হবে। আপনার যদি মাথা ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে সামান্য তেল নিয়ে কপালে ও মালিশ করতে পারেন। এতে মাথাব্যথা দূর হবে। নিয়মিত কেশরাস তেল ব্যবহার করলে চুল হবে ঘন কালো, মজবুত, লম্বা। আবার কেউ চাইলে চুল শ্যাম্পু করার দুই ঘন্টা আগে ব্যবহার করতে পারে।

কেশরাজের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

আমরা এতক্ষণ জানলাম কেশরাজ গাছ এর উপকারিতা অনেক। তবে কেশরাজ ব্যবহারে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কি কিছু ক্ষেত্রে কেশরাজ ব্যবহার করা একেবারে উচিত নয়। অতিরিক্ত যে কোন কিছু শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
  • যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে তাদেরক কেশরাজ পাতা বা রস খাওয়া ঠিক নয়।
  • কিডনির সমস্যা রয়েছে এমন রোগীদের কেশরাজ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • হার্টের রোগীদের কেশরাজ ব্যবহার করা উচিত নয়।
  • কেমোথেরাপি চলছে এমন রোগীদের কেশরাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কেশরাজ এগিয়ে চলা ভালো।
  • গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কেশরাজ বিষাক্ত প্রভাব ফেলতে পারে।
  • সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর বয়সে কেশরাজ এড়িয়ে চলা উত্তম না হলে এতে বাচ্চা ও মায়ের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পরতে পারে ।
  • রক্তচাপের সমস্যা থাকলে কেশরাজ গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

মন্তব্য

কেশরাজ এর উপকারিতা অত্যন্ত বেশি। কেশরাজ বিভিন্নভাবে মানুষের উপকার করে। তবে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। আজকে আর্টিকেলটিতে কেশরাজ এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আরো তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html

comment url