বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ
বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ- বর্তমান সময়ে বিবাহ বিচ্ছেদ একটি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ সামাজিক জীব এবং বিয়ে হচ্ছে একটি সামাজিক বন্ধন। বর্তমান সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যার পরিমাণ অনেক বেশি। আজকাল অনেক তুচ্ছ কারনেও অনেক পরিবারের বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে। বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ, বাংলাদেশে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিসংখ্যান সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিবাহ বিচ্ছেদের পেছনে অনেক গুলো কারণ থাকতে পারে। যত দিন যাচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে । তালাকের অপব্যবহার করার কারনেও এমন সময়ে ব্যাপক হরে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে। চলুন বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ সম্পর্কে জানা যাক -
বাংলাদেশে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিসংখ্যান
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে যে পরিমাণ বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বাড়ছে ধারণার বাইরে। আপনি জানলে হয়তো চমকে উঠবেন। চলুন বাংলাদেশের বিবাহ বিচ্ছেদের পরিসংখ্যান সম্পর্কে কিছুটা ধরা যাক -
বিগত কয়েক বছর ধরে বিচ্ছেদের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলছে। বিভিন্ন কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে, সামান্য ঝগড়ার কারণেও অনেক দাম্পত্য জীবন নষ্ট হচ্ছে। শুধুমাত্র ঢাকার দুইটি সিটি কর্পোরেশনের বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদনের সংখ্যা অত্যন্ত উদ্বেগপুণ্য বলে জানা যায়। একটি
আরো পড়ুনঃ পরিবেশ দূষণের ১২টি কারণ
পরিসংখ্যানে রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২২ সালে প্রথম ১৯০ দিনের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের অবদানের সংখ্যা ছিল ৪৭০০ টি। অর্থাৎ যেসব হিসাব করলে দেখা যায় প্রতি ঘন্টায় সিটি কর্পোরেশনে একটি পরিবার ভাঙার জন্য আবেদন জমা হয়েছে। এবং যত দিন যাচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে । বিবাহ
বিচ্ছেদের সংখ্যা গ্রাম অঞ্চল থেকে শহরে বেশি পরিমাণে দেখা যায়। একটি চঞ্চল্যকর তথ্য হচ্ছে বেশ বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করার জন্য ৭০ শতাংশ আসে নারীদের থেকে এবং ৩০ শতাংশ আসে পুরুষদের কাছ থেকে। যারা বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেন তাদের অধিকাংশই মানুষ হচ্ছে
শিক্ষিত। সাধারণ মানুষদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা সব থেকে বেশি। একটি জরিপে দেখা গেছে ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকায় বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা ৭৫ হাজার এবং দৈনিক ৫৫
থেকে ৬৫টি বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জমা হয়। গত ২২ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত অর্থাৎ মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যা ৫৯৭০টি। যা অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপক হয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় প্রতিদিন
প্রায় ৪৪ টি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটেছে। অর্থাৎ প্রতি ৪৫ মিনিটের ১টি তালক হয়েছে। এইসব পরিসংখ্যান অনুযায়ী কর্মজীবী স্বামী-স্ত্রী দের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ১২০৫ টি বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে থাকে। যা গত বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পেরেছে ৯২০ টি। ২০২২
সালে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯.৭৮ শতাংশ। ২০২২ সালের বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ২০২১ সালের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী চট্টগ্রামে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা ৪,৮৭৫টি। সেই বছরে দশ মাসের
ব্যবধানে সিলেটে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করা দম্পতির সংখ্যা ২,৩৩৬ টি। এ সংখ্যাগুলো অত্যন্ত পরিমাণে বেশি। এইসব পরিসংখ্যান দেখলে যেকোন মানুষের মনে প্রশ্ন জাগবে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ কি? কেন এমন ভয়ানক হারে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে চলেছে? এইসব বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ নিয়ে এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হবে সাথেই থাকুন।
বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ
বিবাহ বিচ্ছেদের পেছনে অনেক গুলো কারণ থাকতে পারে। আজকাল অনেক তুচ্ছ কারনেও অনেক পরিবারের বিবাহ বিচ্ছেদ হচ্ছে। চলুন বর্তমান সময়ে বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ গুলো জানা যাক -
১.পাত্র-পাত্রী ভুল নির্বাচন
বিবাহ বিচ্ছেদের একটি প্রধান কারণ হতে পারে ভুল পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করা। একটি বিবাহিত জীবন শুরু করার জন্য অবশ্যই সর্বপ্রথম যে বিষয়টি খেয়াল করতে হবে সেটি হচ্ছে পাত্র পাত্রে নির্বাচন করা। এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি যেমন চরিত্র অধিকারী হবেন আপনার জীবনসঙ্গী নির্বাচন করতে হবে একই
রকম চরিত্রের। বিয়ের ক্ষেত্রে যদি পাত্র পাত্রী একে অপরের জন্য সঠিক না হয় বা মানানসই না হয় (অর্থাৎ একে অপরকে মানিয়ে নেওয়ার মত মানসিকতা যদি না থাকে) তাহলে অবশ্যই সে বিয়ে বা সংসার বেশিদিন টিকবে না। এক্ষেত্রে খুব দ্রুতই একটি সংসার ভেঙে যায়। এজন্য বিয়ের ক্ষেত্রে
অবশ্যই সঠিক পাত্র পাত্রী নির্বাচন করতে হবে। সঠিক পাত্র পাত্রে নির্বাচন করতে না পারা এই একটি কারণ ব্যাপক হারে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। একটি মাত্র কারণে হাজারো চেষ্টা করে পরবর্তীতে এই সম্পর্ক টেকানো যায় না। দ্বীনদারি বা ধর্মপরতা হল খোদা ভীরুতার গুণ প্রতিটি মুমিনের
মধ্যে থাকা অত্যন্ত জরুরী বা অপরিহার্য।নারীদের যাবতীয় গুণের মধ্যে এই একটি গুণ আবশ্যকীয়। ইসলামিক ধর্ম মতে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন ‘কেবল আর্থিক অবস্থান বাবার জিৎ রূপগুণ দেখে পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করা উচিত নয়। যার ফলে পরবর্তীতে এ সংসার টেকসই হয় না, সুখের হয় না।’
বিবাহ বিচ্ছেদ এড়াতে হলে এড়াতে হলে অবশ্যই ভুল পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করা যাবে না। ভুল পত্র পাত্রী নির্বাচনের কারণে আপনার জীবন শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই সাবধান।
২.সুশিক্ষার অভাব ও ধর্মীয় অনুশাসন
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ সমূহ মধ্যে একটি কারণ হচ্ছে সুশিক্ষার অভাব ও ধর্মীয় অনুশাসন। একটি সংসার জীবন প্রচুর পরিমাণে ধৈর্য শক্তি প্রয়োজন। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, একে অপরের হক চেতনতা, বিনয় ওছারের মানসিকতা এই সময় ধর্মীয় অনুশাসন এই বিষয়ে
আওতাভুক্ত রয়েছে। ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে আরো রয়েছে পদ্মা রক্ষা করা পরপুরুষ বা পরনারীর সাথে সম্পর্ক মেলামেশা থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি। এইসব পালন না করার কারণে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে অবনতি ঘটছে ও বিবাহ বিচ্ছেদের উল্লেখ্যযোগ্য কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান সময়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে
একে অপরের সাথে মানিয়ে নেওয়ার যে মন মানসিকতা এইটা এখনকার সময় অনেক কম দেখা যাচ্ছে। যা বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম একটি কারণ হিসেবে লক্ষ্য করা যায়। স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের হক আদায় না করা, ন্যায় অধিকার পালন না করার কারণেও বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বাড়ছে। স্বামী স্ত্রী একে
অপরের মধ্যে সুশিক্ষার অভাব থাকার কারণে ও বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সুশিক্ষার অভাবের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বা পরিবারের মধ্যে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা লেগেই থাকে। যা বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ গুলোর মধ্যে একটি।
৩.স্ত্রীর প্রতি কঠোরতা ও জুলুম করা
একজন স্ত্রীর প্রতি যদি দিনের পর দিন কঠোরতা ও জুলুম করা হয় তাহলে একটা সময় পর স্ত্রী অতিষ্ট হয়ে ডিভোর্সেকে বেছে নিতে বাধ্য হয়। আমাদের সমাজে এমন অনেক স্বামী আছে যারা স্ত্রী উপর প্রতিনিয়ত প্রতি কঠোর অত্যাচার ও জুলুম করে থাকে। অনেক সময় অত্যাচারের মাত্রা এতটাই বেড়ে
যায় যে স্ত্রী বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়। একজন মেয়ে সবকিছু ছেড়ে তার স্বামীর বাড়িতে যায়। সে তার স্বামীর জন্য সবকিছু বিসর্জন দিয়ে থাকে। তাই এমন অবস্থায় স্বামী ও স্বামী পরিবারের সকলকে কঠোরতা পরিহার করা প্রয়োজন। স্বামী স্ত্রীর প্রতি কঠোরতা দূর করতে না পারলে সম্পর্কে
তিক্ত দেওয়া শুরু হয় এবং দিন দিন নটীর দিকে যাই শেষ পর্যন্ত বিবাহ বিচ্ছেদের পাড়ি দেই। একজন স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সুশিক্ষার অভাব থাকলে অত্যাচার ও জুলুম করতে পারে। বিবাহ বিচ্ছেদের একটি অন্যতম কারণ। ইসলামী শরীয়ত মতে শারীরিক, মানসিক কোনোভাবে নির্যাতন করা যাবে না। নারীদের সাথে উত্তম উপায়জীবন যাপন করতে হবে।
৪.তালাকের অপব্যবহার
তালাকের অপব্যবহার করার কারনেও এমন সময়ে ব্যাপক হরে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে। বলা হয়ে থাকে বিবাহ বন্ধন অনেক শক্ত ও অনেক মজবুত হয়ে থাকে। এইজন্য যেকোনো সাধারণ কারণে তালক বা বিবাহ বিচ্ছেদ নয়। ইসলামী শরীয়তের নির্দেশনা মতে শেষ পর্যন্ত বৈবাহিক সম্পর্ক রক্ষায় প্রয়াসী হতে
হবে। বিবাহ বিচ্ছেদ ও তালাক পর্যায়েটি হচ্ছে সর্বশেষ পর্যায়, যা একান্তর অনিবার্য প্রয়োজনের স্বার্থেই করা হয়েছে। যেকোনো ছোটখাটো সমস্যার জন্য বৈবাহিক বিচ্ছেদ এর নির্দেশ দেওয়া হয়নি। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে মনোমালিন্য ঝগড়া-বিবাদ ইত্যাদি সমস্যা লেগে থাকতেই পারে। যদি এমন হয় তাহলে
অবশ্যই নিজেদের মধ্যে সেটি দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। ছেলেদের হাতে মেয়েদেরকে তালাক দেওয়ার হাতিয়ার রয়েছে তবে সেটি যেকোনো ছোটখাটো কারণে অপব্যবহার করা যাবে না। বর্তমান সমাজের অনেক ছোটখাটো কারণেও অনেক স্বামীরা তাদের স্ত্রীদেরকে বিনা অপরাধে তালাক
দিয়ে থাকে। যা একেবারে ঠিক নয়। সাধারণ কারণে তালাকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বোকামি এবং কুরআন সুন্নাহর সম্পূর্ণ বিপরীত। কথায় কথায় স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের তালাক আলোচনা করা স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার আরো একটি কারণ।
৫.তালাকের দায়িত্ব নারীদের হাতে প্রদান করা
বর্তমান সময়ে অতিরিক্ত বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা স্পর্শকতয়ে উঠেছে। এখনকার সময় বিবাহ বিচ্ছেদটি কেবলমাত্র বিশেষ ক্ষেত্র ব্যবহার করার অস্ত্র হিসেবে দাঁড়িয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই একবার হাত থেকে বেরিয়ে গেলে ফিরিয়ে আনার সুযোগ থাকে না। তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত খুব ঠান্ডা মস্তিষ্কে ভেবে চিন্তে
তারপর নিতে হয়। যা সাধারণত নারীদের কাজ নয়। সব দিক বিবেচনা করে মৌলিকভাবে এ দায়িত্ব ইসলামপুরুষদের কে দিয়েছে। যাতে করে বিবাহ বিচ্ছেদের সময় তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যখনই দায়িত্ব নারীদের হাতে কাঁধে তুলে দেওয়া হয় তখন এর অপব্যবহার ও অপরূপ শুরু হয়ে যায়।
বিবাহবিচ্ছেদে জরিপে দেখা গেছে ৭০ শতাংশ বিবাহ বিচ্ছেদ হয় নারীদের পক্ষ থেকে এবং ৩০ শতাংশ হয় ছেলেদের পক্ষ থেকে। তালাকের দায়িত্ব নারীদের হাতে প্রদান করায় অনেক নারীরা এর অপব্যবহার শুরু করেছে। অনেক নারী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় একটি মোটা অংকের টাকা ছেলেদের থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য। এই ব্যাপারটা অনেকটা ব্যবসার এর মত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৬.যৌতুক প্রথা
বিবাহ বিচ্ছেদের প্রধান কারণ গুলোর মধ্যে একটি যৌতুক প্রথা বলা যায়। যৌথ প্রথার জন্য প্রতিনিয়ত অনেক অনেক বিবাহিত জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ছেলে পক্ষ থেকে মেয়ে পক্ষের কাছে খেয়ে নেও বা তলপ করা সম্পূর্ণ অবৈধ ও ঘুষ হিসেবে গণ্য হয়। যেসব ফ্যামিলি অর্থনৈতিক অবস্থা একটু খারাপ
তাদের জন্য যৌতুক বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু অনেক বাবা মা তাদের মেয়েকে সুখে রাখার জন্য বাধ্য হয়ে যৌতুক দিয়ে থাকে। ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি অনেক জঘন্য অনিন্দ্যনীয় অপরাধ। যৌতুকের কারণে অনেক সংসার ভেঙে যায় যার সঠিক হিসাব নাই। যৌতুকের জন্য স্বামী স্বামীর
পরিবারের সদস্যদের চাচার নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হয় নারীরা। কখনো কখনো অত্যাচারের মাত্রা এতটাই তীব্র থাকে সহ্য করতে না পেরে মৃত্যুর পথ বেছে নেয়।যৌতুকের দাবি কিংবা নির্যাতনের জন্য কোন নির্দিষ্ট বয়স সীমা নেই যেকোনো বয়সে মেয়েদেরকে এ নির্যাতনের শিকার হতে হয় কিছু কুৎসিত মানসিকতার মানুষের কাছে।
৭.পরকীয়ায় সাথে জড়িয়ে পড়া
বিবাহ বিচ্ছেদের একটি অন্যতম জঘন্য কারণ হচ্ছে পরকীয়া সাথে জড়িয়ে পড়া। এই পরকীয়া জন্য হাজার হাজার সংসার ভেঙে যায়, ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়, বাচ্চা থাকলে সে বাচ্চার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমান সময়ে পরকীয়ার হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরকীয়ার জন্য বহু বছরের সংসারও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শহরের একটি চিত্র হচ্ছে একই ছাদের নিচে থেকেও নারী পুরুষ একই
বিছানায় শুয়ে বিপরীত মুখে পরকীয়ায় জঘন্যভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে। গ্রাম বাংলায় ও এই পরকীয়া শব্দটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পরকীয়ার শক্তি হচ্ছে মোবাইল ফোন । অনেকে স্বামী আয় রোজগারের উদ্দেশ্যে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে এবং অনেক স্ত্রীরা এটির সুযোগ নিচ্ছেন। যার ফলে পারিবারিক মূল্যবো নষ্ট হচ্ছে। যা বিবাহ বিচ্ছেদের আরো একটি অন্যতম কারণ।
৮.ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার
বর্তমান সময়ে সামাজিক ভারসাম্য বিনষ্ট করার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে ইউটিউব, ফেসবুক টুইটার, টিক টক ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়া সমূহ। সমাজের মানুষের নানা ধরনের অপকর্মের জন্য দায়ী বলা যায় সোশ্যাল মিডিয়াকে। যদিও মূল দায়ী সে যে অপকর্মগুলো করে। সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক অপকর্ম অনেক সমাজ সংস্কৃতি ঘর সংসার নষ্ট করছে বলা যায়। দুর্বল হচ্ছে সামাজিক বন্ধন এবং
মানুষের সাথে মানুষের সম্পত্তির দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে অনলাইন মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা মানুষকে সামাজিক যোগাযোগ ও ডিজিটাল মাধ্যম নির্ভর করে তুলেছে। অবক্ষয় হচ্ছে সামাজিক মূল্যবোধ ও অনুশাসন। যার ফলে অনেক সাজানো গোছানো সুখের সংসারও নষ্ট হচ্ছে, ভেঙে যাচ্ছে, বিবাহ বিচ্ছেদ দেখা যাচ্ছে।
৯.রাগ বেশি হওয়া, ধৈর্য না থাকার
বর্তমানে অহর রহোর বিবাহ বিচ্ছেদের আরো একটি কারণ হচ্ছে স্বামী-স্ত্রী অতিরিক্ত রাগ, মানসিকতা না থাকা, ধৈর্য শক্তি কম থাকা। একটি সংসারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া ও ভালোবাসা খুনসুটি থাকবেই। তবে ঝগড়া টিকে সংসারের ভেতরে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত, আর কোন বিষয়ে মনোমালিন্য দেখা দিলে সেটি
দুজনে সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করা প্রয়োজন। এইজন্য অবশ্যই ধৈর্যধারণ করতে হবে, রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, একে অপরকে মানিয়ে নিতে হবে। বর্তমান সময়ের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এই জিনিসগুলো কম থাকার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা এত বেশি হলে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
১০.মাদকাসক্তি,বন্ধ্যাত্ব এবং পুরুষত্বহীনতা
ইসলামী বিধান মতে মাদকদ্রব্য গ্রহণ করা হারাম এবং অপবিত্র। যারা মাদকাসক্ত হয় তারা তাদের নিজেদের মধ্যে মানবিক জ্ঞান রাখতে পারেনা। বিভিন্ন কারণে খারাপ আচরণ করে বউয়ের উপর অত্যাচার করে, মারধর করে। স্বামী যদি মাদকাসক্ত হয় বা স্ত্রী যদি মাদকাসক্ত হয় তাহলে তাদের সংসার বেশিদিন টিকে না। বর্তমানে মাদকাসক্তি, বন্ধ্যাত্ব অপুরুষত্বহীনতার জন্য অনেক বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে।
এতক্ষণ বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ সম্পর্কে অনেক আলোচনা হল আশা করি বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ সম্পর্কে আপনার কিছুটা ধারণা হয়েছে। এই সব ধারণা নিয়ে আপনার বিবাহিত জীবনে যদি ঝামেলা হয়ে থাকে তাহলে আপনি এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে সেসব ঝামেলা মিটিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদকে এড়িয়ে চলুন।
মন্তব্য
মানুষ সামাজিক জীব এবং সমাজে বাস করতে সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়। সঠিক পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করে সকলের বিয়ে করা উচিত। সঠিক পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করতে না পারা বিবাহ বিচ্ছেদের অন্যতম কারণ। বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ সমূহ নিয়ে আজকের আর্টিকেলটিতে ইতিমধ্যে বিস্তারিত
আলোচনা করা হয়েছে। বিবাহ বিচ্ছেদ বর্তমান সময়ে মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বিচ্ছেদের সংখ্যা কমিয়ে আনা প্রয়োজন এজন্য অবশ্যই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দুজন দুজনকে মানিয়ে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে নিজেদের অতিরিক্ত রাগ কন্ট্রোল করতে হবে ইত্যাদি যেসব বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ
সমূহ যেগুলো রয়েছে সেসব কারণ থেকে শিক্ষা নিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করতে হবে। এতক্ষন আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ কোন মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
https://www.dyinamicit.com/p/blog-page_16.html
comment url